পেল্লায়: লক্ষ্য লোকসভা ভোট। বিজেপি-এডিএমকে-পিএমকের জোটের জনসভা। বুধবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই
কংগ্রেসের ১৯। জেডিএসের ৯। দিল্লিতে আজ সকালে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকে এই সূত্রে আসনরফা পাকা করে ফেললেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। বিকেলে তাঁরই রাজ্যে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী তাঁকে চিহ্নিত করলেন ‘রিমোট-চালিত মুখ্যমন্ত্রী’ হিসেবে। বেঙ্গালুরুর সভায় বিরোধীদের মহাজোটকে ফের বললেন ‘মহাভেজালের জোট’।
বালাকোট অভিযানের ফলাফল নিয়ে গোটা দেশে, এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরে তুমুল বিতর্ক অব্যাহত থাকলেও এর পরোক্ষ উল্লেখ ছাড়া, আজও কিছু শোনা গেল না মোদীর মুখে। বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের জবাবে তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি চেষ্টা করছি সন্ত্রাসবাদ, দারিদ্র আর দুর্নীতি দূর করতে। আর ওরা তৎপর আমাকে সরাতে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, হিন্দুস্থান, পাকিস্তান, চোর, দুর্নীতিবাজ কাউকেই তিনি ভয় পান না। কারণ, ১২৫ কোটি মানুষের আশীর্বাদই এই সরকারের শক্তি।
ভোট ঘোষণা হয়ে যাবে কয়েক দিনের মধ্যেই। তাঁর আগে যাবতীয় প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন সেরে ফেলতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। এ দিনও তামিলনাড়ুর কিলম্বক্কমে ও পরে কর্নাটকের কলবুর্গীতে অনেকগুলি সড়ক ও রেলপ্রকল্পের সূচনা ঘটান তিনি। কলবুর্গীর সভায় বিরোধী জোটকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘মহাভেজালের সরকারের কাছ থেকে অর্ধেক ফল মিলতে পারে। কেন্দ্রে ৩০ বছর পর একক গরিষ্ঠতা নিয়ে কোনও দল সরকার গড়েছে। এই সরকার পূর্ণ। কাজও পুরো করে। এই কারণেই বিরোধীদের কাছে সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছি। বিরোধীদের এখন একটাই কাজ— মোদী হটাও।’’
বিরোধীদের মহাজোট যে বিজেপিকে ভাবাচ্ছে, বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের নিরন্তর আক্রমণে তা বেশ স্পষ্ট। মোদীর এ দিনের বক্তৃতারও অনেকটা জুড়ে ছিল কর্নাটকে জেডিএস-কংগ্রেসে জোট সরকারের ব্যর্থতা। গত বিধানসভা ভোটে একক বৃহত্তম দল হয়েও ক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে এ রাজ্যে। এ বার লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-জেডিএস রফা আদৌ মসৃণ ভাবে হয় কি না সে দিকে নজর রাখছে অমিত শাহের দল।
জেডিএস প্রথমে ১২টি আসনে লড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আজ অবশ্য দলের প্রতিষ্ঠাতা-নেতা এইচ ডি দেবগৌড়া সুর নরম করে সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা ৯-১০টি আসনে লড়বেন। পরে তাঁর ছেলে কুমারস্বামী দিল্লিতে জানান রফা হয়েছে ৯টি আসনে। আসনসংখ্যা নিয়ে রফা হলেও এ রাজ্যে কংগ্রেস-জেডিএসের জোটের আসল সমস্যা আসন বাছাই নিয়ে। দু’দলই চাইছে মহীশূর, টুমকুর, চিত্রদুর্গের মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আসনে লড়তে।
কংগ্রেসের আর একটি সমস্যা, দলের ভাঙন। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সময় থেকে বেশ কয়েক সপ্তাহ বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন তাদের চার বিধায়ক। বিজেপির কাছে তাঁরা বিক্রি হয়ে গিয়েছেন বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। ওই চার বিধায়ক সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছেন। তাঁদেরই এক জন, মোহন যাদব দু’দিন আগে স্পিকারকে দল ছাড়ার চিঠি দিয়েছেন। সেই পদত্যাগ এখনও গ্রহণ করেননি স্পিকার। তার আগেই আজ কলবুর্গীতে মোদীর সভামঞ্চে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মোহন। বি এস ইয়েদুরাপ্পা তাঁকে স্বাগত জানান। মোদী তখনও মঞ্চে আসেননি।
লোকসভা ভোটে এই কলবুর্গী কেন্দ্রেই মোহনকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে তাঁকে লড়তে হতে পারে কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের বিরুদ্ধে। ন’বারের বিধায়ক ও দু’বারের সাংসদ খড়্গে আজ পর্যন্ত হারের মুখ দেখেননি কোনও ভোটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy