ছবি: পিটিআই।
যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ধারাবাহিক সামাজিক উপেক্ষা এবং বঞ্চনা লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর কাছে পাল্টা হয়ে ফিরে আসতে পারে উত্তরপ্রদেশে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন দশেক আগে এমনটাই দাবি করছে সে রাজ্যের বিজেপি-বিরোধী জোট।
ছ’দফা ভোট শেষ। উত্তরপ্রদেশে বাকি আর ১৩টি আসনে নির্বাচন। কিন্তু এখনই বিজেপিকে সে রাজ্যে অনেকটাই কোণঠাসা করে ফেলা গিয়েছে বলেই মনে করছে এসপি-বিএসপি-আরএলডি জোট। তাদের ব্যাখ্যা, যাদব-জাঠভ এবং মুসলমান ভোটব্যাঙ্ককে সংহত করে একটি মঞ্চে নিয়ে আসা গিয়েছে। তাঁরা একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ ভাবে জোটপ্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে গত দু’বছরের প্রবল উষ্মা তৃণমূল স্তরে জোটের পালে হাওয়া তুলছে বলে মনে করছেন রাজ্যের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ২০১৪ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশের বর্ণহিন্দু সমাজে প্রভাব বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল। কিছু দলিত এবং তফসিলি জাতির মধ্যেও আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা করেছে। কিন্তু পৃথক ভাবে যাদব এবং জাঠভ শ্রেণির অভিযোগ, তাদের ক্রমশ সামাজিক ভাবে একঘরে করা হয়েছে যোগীর জমানায়। মন্ত্রিসভা, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সরকারি দায়িত্বশীল পদ— কোথাও জাঠভদের প্রতিনিধিত্ব নেই। স্থানীয় থানাগুলিতেও তাঁদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ব্যবহারের অভিযোগ সাম্প্রতিক অতীতে বারবার উঠে এসেছে। অন্য দিকে এসপি-র এক নেতার কথায়, ‘‘আদিত্যনাথের সরকার যাদবদের ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রেখেছে। তাদের হাতে কোনও রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই। যাদব অফিসারেরা প্রতি পদে লাঞ্ছিত হন। তাঁরা থানায় যাওয়া পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছেন কোনও লাভ হবে না বলে। ফলে মায়াবতীর প্রতি যাদবের গভীর সখ্য না থাকলেও, এ বারের ভোটে সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষোভ যাদবদের মায়া-অখিলেশ জোটের দিকে নিয়ে এসেছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সূত্রের মতে, বিজেপি সবর্ণ এবং উঁচু জাতের প্রতিনিধিত্ব করে, এ কথা জানা সত্ত্বেও ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে যাদবদের একটি বড় অংশ ভোট দিয়েছিল মোদীকে। কিন্তু যোগী আসার পর প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যায়। সরকার পক্ষের তরফে যাদবদের প্রতি অসূয়ার ভাবই ক্রমশ প্রকট হয় বলে অভিযোগ। জোট নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘সাধারণ ভাবে তফসিলি জাতির প্রতি বিজেপি-র আচরণটা অনেকটাই মাতব্বরসুলভ। সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দলিত সম্প্রদায়কে মেনে নিতে চায় না বিজেপি।’’ ফলে এ কথাও রাজনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে যে, অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতীর জোটের সিদ্ধান্ত উপরের স্তরে নেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তৃণমূল স্তর থেকেও এই জোটের জন্য একটি স্বাভাবিক চাহিদা ছিল। বুয়া-বাবুয়া কাছাকাছি এসে সেটাই পূরণ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy