Advertisement
E-Paper

কমিশনের কড়া মূর্তি দেখে খুশি আদালত

কুকথা-ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া রুখতে নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই একাধিক নির্দেশিকা জারি করে কমিশন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৮
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কারের মুখে পড়ে গত কালই নড়চড়ে বসতে বাধ্য হয়েছিল নির্বাচন কমিশন। দেরিতে হলেও, নির্বাচনী প্রচারে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও ধর্মকে টেনে আনার অভিযোগে একে একে শাস্তির মুখে পড়েন বিজেপির যোগী আদিত্যনাথ, মেনকা গাঁধী, বিএসপির মায়াবতী ও এসপির আজম খান। সন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট আজ বলেছে, মনে হচ্ছে অবশেষে কমিশন জেগে উঠেছে। কমিশনের সক্রিয়তা দেখে আপাতত ওই মামলায় আর কোনও পদক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত।

কুকথা-ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া রুখতে নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই একাধিক নির্দেশিকা জারি করে কমিশন। কিন্তু দেখা যায় প্রথম পর্বের নির্বাচন শেষ হতে না হতেই কার্যত কুকথার নজির গড়ে ফেলেছেন শাসক থেকে বিরোধী সব দলের নেতা-নেত্রীরাই। এ নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন হরপ্রীত মনসুখানি নামে এক অনাবাসী ভারতীয়। গত কাল ওই মামলার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানতে চান, কুকথা আটকানোর জন্য কমিশনের হাতে কী ধরনের ক্ষমতা রয়েছে। কারণ শীর্ষ আদালত মনে করে, এ ভাবে চোখ বুজে থাকতে পারে না কমিশন।

জবাবে কমিশনের আইনজীবী স্বীকার করে নেন, কমিশনের ক্ষমতা সীমিত। তারা কার্যত নখদন্তহীন। কোনও নেতা একাধিকবার কুকথা বললে চলতি আইনে কমিশন বড়জোর এফআইআর করে পুলিশকে ফৌজদারি মামলা শুরু করার নির্দেশ দিতে পারে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এই বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি জানান, কমিশনের হাতে কী ক্ষমতা রয়েছে, তা আদালত আজ বিচার করে দেখবে। বিশেষ করে ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদিত্যনাথ ও মায়াবতীর বিরুদ্ধে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কমিশন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা-ও শীর্ষ আদালতকে জানাতে বলা হয়। কমিশনের গা-ছাড়া মনোভাবে তাঁরা যে ক্ষুব্ধ তা বুঝিয়ে দেন ডিভিশন বেঞ্চের তিন বিচারপতি।

তার পরেই দ্রুত দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। যে কমিশন আদালতকে জানিয়েছিল তাদের কোনও ক্ষমতা নেই, সেই কমিশনই প্রথম বার নখদন্ত বার করে। একের পর এক শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে অভিযুক্ত নেতাদের উপরে। প্রথমে প্রচারে ধর্ম টেনে আনার কারণে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও বিএসপি নেত্রী মায়াবতীকে যথাক্রমে তিন ও দু’দিন সমস্ত রকম প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন। এর পরে বিজেপি প্রার্থী জয়া প্রদা সম্পর্কে কুকথা বলায় এসপি নেতা আজম খানকে তিন দিন এবং ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনকা গাঁধীকে দু’দিন প্রচারে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি শোনানো হয়।

কমিশনের এই কড়া অবস্থানে আজ সন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি কমিশনের আইনজীবীকে বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে কমিশন তাদের ক্ষমতা ফিরে পেয়েছে। অবশেষে জেগে উঠেছে কমিশন।’’ তবে আদালত এখনই মামলাটি খারিজ না করে অনির্দিষ্টকাল মুলতুবি করে দিয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হলে প্রয়োজনে ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন ওই আবেদনকারী।

শাস্তির ক্ষেত্রে দিনের তারতম্যের কারণের আজ ঘরোয়া ভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে, যোগী আদিত্যনাথকে এক বার আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি একই অন্যায় করায় তাঁকে তিন দিন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে পাঁচ বছর আগে লোকসভা ভোটের প্রচারে অমিত শাহ ও আজম খানের কুকথার তরজা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে দু’জনের উপরেই বাকি নির্বাচনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। আজম খান আবার কুকথা বললে তাঁকে ফের গোটা নির্বাচনে প্রচার করতে না দেওয়া হতে পারে।

Lok Sabha Election 2019 Election commission লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy