Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Lovlina Borgohain

Lovlina Borgohain: আটকে যাচ্ছে ভিআইপি-দের গাড়ি, অবশেষে পাকা হচ্ছে লভলিনার গ্রামের বাড়ির রাস্তা

লাভলিনার পদক নিশ্চিত হওয়ায় গত কাল সন্ধ্যায় সরুপথারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকনের গাড়ির কনভয় রওনা দেয় বারো মুখিয়ার উদ্দেশে।

কাঁচা রাস্তায় আটকে বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকনের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

কাঁচা রাস্তায় আটকে বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকনের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২১ ০৬:২৬
Share: Save:

ঠিক এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলেন বারো মুখিয়া গ্রামের মানুষ। ঘরের মেয়ে পদক জিতবে অলিম্পিক্সে। আর গ্রামের বাড়িতে আসতে গিয়ে রাস্তায় আটকে পড়বেন ভিআইপিরা! তেমনটাই হল। এবং হাতেনাতে এত দশকের আশাও পূরণ! অলিম্পিক্সে লাভলিনা বরগোহাঁই ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করার পরেই তাঁর বসত, গোলাঘাট জেলার অজ পাড়াগাঁ বারো মুখিয়া গ্রামে যাওয়ার মাটির রাস্তা পাকা করার কাজে হাত দিল সরকার।

দেশের জন্য ঘরের মেয়ে পদক আনবে— এই আশা তো ছিলই, কিন্তু গুয়াহাটি থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে, হাজার দুয়েক বাসিন্দার গ্রাম বারো মুখিয়ার মানুষের আরও আশা ছিল, একটা মেডেলের জোরে গ্রামে আসার কাদা রাস্তাটায় পিচ পড়বে। গ্রামে আসবে পাইপলাইনের পরিষ্কার জল। গ্রামের শয্যাহীন, ডাক্তারহীন স্বাস্থ্যকেন্দ্রও ভোল পাল্টাবে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল হিমা দাসের গ্রাম কান্ধুলিমারির ক্ষেত্রে।

লাভলিনার পদক নিশ্চিত হওয়ায় গত কাল সন্ধ্যায় সরুপথারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকনের গাড়ির কনভয় রওনা দেয় বারো মুখিয়ার উদ্দেশে। কিন্তু কাঁচা রাস্তা, কাদা-জলের গর্ত ঠেলে মেডেলবিজয়িনীর বাড়ি পর্যন্ত আর পৌঁছানো হয়ে ওঠেনি বিধায়কের। সরেজমিনে রাস্তার অবস্থা দেখে তিনি ঘোষণা করে দেন, রাস্তা পাকা করার কাজ শুরু হবে। শুধু তাই নয়, বিশ্বজিৎ আরও বলেন, বরপথারের নাহারবাড়ি এলাকায় ৪০ বিঘা জমি নিয়ে উন্নতমানের ক্রীড়া প্রকল্পও তৈরি করা হবে।

গ্রামের মানুষ জানান, বারো মুখিয়ায় যাওয়ার ১২ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করতে ২০১৬ সালে উদ্যোগ নেওয়া হলেও ১০০ মিটার কাজ হওয়ার পরে সব বন্ধ হয়ে যায়। লাভলিনার পড়শি হেমন্ত মহন্ত, পারিবারিক বন্ধু হরেন গগৈদের বক্তব্য, “গ্রামের রাস্তা পাকা করতে লাভলিনাই ছিল আমাদের শেষ আশা। ও মেডেল না পেলে এই রাস্তায় হয়ত আর কোনওদিনই পিচ পড়তো না।”

আজ থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দিনের পর দিন কাদা মেখে, হাঁটু জল পার করে এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করেছে অলিম্পিয়ান লাভলিনা। সেই মেয়ে, মেডেলভাগ্যে, বাড়ি পর্যন্ত পাকা রাস্তার বন্দোবস্ত করে টোকিও থেকে ফিরছে।

এ দিকে দিদি যখন জাপানে মেডেল জয় নিশ্চিত করছে তখন হাতের কাছে বোনকে পেয়েই অভিনন্দনে ভরিয়ে দিচ্ছেন যোধপুরের মানুষ। লাভলিনার বোন লিমা কিক বক্সিং করত। সম্প্রতি সে সিআইএসএফ-এ চাকরি পেয়েছে। কর্মস্থল যোধপুর বিমানবন্দর। দিদির লড়াই সে বিমানবন্দর থেকেই দেখেছে। জেতার পরে সিআইএসএফের সহকর্মী, অফিসার, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দিদির হয়ে বোনকে অভিনন্দন জানায়। বিমানবন্দরেই ছোটখাটো উদ্‌যাপনের আয়োজনও হয়। লিমা জানায়, মা ছোট থেকেই দুই বোনকে খেলায় উৎসাহ দিয়ে এসেছে। দিদির আজকের সাফল্য সেই উৎসাহেরই ফসল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lovlina Borgohain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE