Advertisement
২১ মে ২০২৪
Parliament Security Breach

সংসদ হানার ‘মূল পাণ্ডা’ ললিতকে পালাতে সাহায্য! এ বার ষষ্ঠ অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করল পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, সংসদ হানার ‘মূল পাণ্ডা’ ললিত ঝাকে দিল্লি থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন মহেশ। ললিতকে অবশ্য বৃহস্পতিবারই গ্রেফতার করে পুলিশ।

Mahesh Kumawat, sixth accused in Parliament security breach arrested by Delhi Police

ষষ্ঠ অভিযুক্ত মহেশ কুমাওয়াত (বাঁ দিকে)। লোকসভার ভিতরে রংবোমা নিয়ে হানা। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:১৪
Share: Save:

সংসদে রংবোমা নিয়ে হানা দেওয়ার ঘটনায় এ বার ষষ্ঠ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্তের নাম মহেশ কুমাওয়াত। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, মহেশকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, সংসদ হানার ‘মূল পাণ্ডা’ ললিত ঝাকে দিল্লি থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন মহেশ। সংসদ হানার মূল মাথা ললিতকে বৃহস্পতিবারই গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা যায়, ওই দিনই ললিতের সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেন মহেশও। তবে তাঁকে আটক করা হলেও এত দিন গ্রেফতার করা হয়নি। গ্রেফতার করা হল শনিবার।

কেন এই ধরনের কাণ্ড ঘটালেন তাঁরা, কী উদ্দেশ্য ছিল, আর কারা এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন— অভিযুক্তদের কাছ থেকে সব জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। অন্য দিকে, আদালতে দিল্লি পুলিশ দাবি করেছে, দেশে ‘নৈরাজ্য’ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন সংসদ হানায় অভিযুক্তরা। শুধু তা-ই নয়, আদালতে পুলিশ এটাও জানিয়েছে যে, এই হানার নেপথ্যে কোনও বিদেশি শক্তি বা জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীদের এক সূত্রের দাবি, সমাজমাধ্যমে যে গ্রুপ তৈরি করেছিলেন ললিত, তার মাধ্যমে অনেক তরুণ-তরুণীকে তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন। সংসদ হানায় অভিযুক্তরা যে তিন রকমের পরিকল্পনা করেছিলেন সেটাও জানতে পেরেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরা চলাকালীন তদন্তকারীদের ললিত জানিয়েছেন, সংসদে হানার জন্য ‘প্ল্যান এ’ এবং ‘প্ল্যান বি’ বানিয়ে রাখা হয়েছিল। যদি ‘প্ল্যান এ’ ব্যর্থ হত, তা হলে ‘প্ল্যান বি’ প্রয়োগ করা হত। সংসদের ভিতরে দু’জন নয়, তিন জনের হানা দেওয়ার কথা ছিল। সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি ছাড়াও তৃতীয় ওই ব্যক্তি কে, জেরায় তা জানতে পারে পুলিশ। তৃতীয় ওই ব্যক্তিই হলেন মহেশ। কিন্তু আচমকাই সেই পরিকল্পনা বদলানো হয়েছিল।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় তারা জানতে পেরেছে যে, সংসদে হানা দিয়ে পালানোর পর কোথায় আশ্রয় নেওয়া হবে, সেটা নিয়ে একটা ধন্দ তৈরি হয়েছিল। তখনই স্থির হয়, দু’জন সংসদের ভিতরে ঢুকবেন, দু’জন বাইরে থাকবেন। আর হানাদারির কাজ শেষে চার জন রাজস্থানের নাগৌরে মহেশের বাড়িতে আশ্রয় নেবেন। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করবেন মহেশ। আর তার পরই মহেশের দিল্লি আসার বিষয়টি বাতিল হয়ে যায়। তা ছাড়া সাগর এবং মনোরঞ্জনের কাছে সংসদে ঢোকার জন্য পাস ছিল। তাই দু’জনই সংসদের ভিতরে ঢুকবেন বলে স্থির হয়েছিল। আর ট্রান্সপোর্ট ভবনের কাছ থেকে রংবোমা জ্বালিয়ে সংসদের দিকে যাওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অমোল শিন্ডে এবং নীলম আজ়াদকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ‘প্ল্যান বি’ অনুযায়ী, যদি নীলম এবং অমোল সংসদ ভবনের কাছে পৌঁছতে না পারেন, তা হলে তখন অন্য দিক দিয়ে কৈলাস এবং মহেশ রংবোমা জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে দিতে সংসদের দিকে এগিয়ে যাবেন। কিন্তু ১২ ডিসেম্বর রাতে যখন হরিয়ানার গুরুগ্রামে বিশাল শর্মা ওরফে ভিকির বাড়িতে মহেশ এবং কৈলাস এসে পৌঁছতে পারেননি, তখন স্থির হয় এই কাজ করবেন নীলম এবং অমোল।

দিল্লি থেকে পালিয়ে রাজস্থানে পৌঁছলে সকলকে আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব পড়েছিল মহেশের উপর। মহেশ পেশায় এক জন দিনমজুর। তাঁর মাসতুতো ভাই কৈলাস। পুলিশ জানিয়েছে, মহেশ তাঁর পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ললিতের জন্য গেস্ট হাউসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ললিত, মহেশ এবং কৈলাস অনবরত পুরো ঘটনার খবর নিচ্ছিলেন রাজস্থান থেকে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় গ্রেফতার হলেন সাগর, মনোরঞ্জন, অমোল, নীলম এবং মহেশ। আর এক অভিযুক্ত বিশালকেও আটক করেছে দিল্লি পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Parliament Security Breach Indian Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE