দিল্লীতে কেজরীবালের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —পিটিআই
উপলক্ষ নীতি আয়োগের বৈঠক। কিন্তু লক্ষ্য ফেডারাল ফ্রন্ট।
আর সেই লক্ষ্যে দিল্লি পৌঁছেই তিন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কার্যত জোট বেঁধে ফেললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য ঝেড়ে ফেললেন ছুঁৎমার্গও। নিজের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে যে বামেরা মমতার চিরশত্রু, দিল্লিতে গিয়ে সেই বামশাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে বৈঠক করতেও দ্বিধা করলেন না। পাশে বসিয়ে করলেন সাংবাদিক বৈঠকও।
রবিবার দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দেবেন বলে শেষ মুহূর্তে জানান মমতা। দিল্লিতে যাওয়ার আগেই ফেডারাল ফ্রন্টের প্রাথমিক ঘুঁটি সাজিয়ে নিয়েছিলেন মমতা। অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নায়ডু, তেলঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সঙ্গে কথা বলেন। আর শনিবার মমতার মতোই দিল্লিতে পৌঁছেছেন চন্দ্রবাবু, কুমারস্বামী। তিন মুখ্যমন্ত্রীই অন্ধ্র ভবনে ওঠেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। চার মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। তারপর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের ধর্নাস্থল রাজ নিবাসেই তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়ে চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সই করা চিঠি লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলকে পাঠানো হয়। কিন্তু অনুমতি দেননি বৈজল। এর পর তাঁরা কেজরীবালের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীকে কেজরীবালের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আসেন।
(বাঁ দিক থেকে) অন্ধ্র্প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠকে মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। —পিটিআই
কেজরীবালের বাড়িতেই সাংবাদিক বৈঠক করেন তাঁরা। কেন্দ্র ও লেফ্টেন্যান্ট গভর্নরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন চার মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি জানান চন্দ্রবাবু, কুমারস্বামী। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘‘কেন্দ্র আমাদের ঠিকমতো কাজ করতে দিচ্ছে না। এটা দেশের পক্ষে বিপদ। আমরা কেজরীবালের পাশে আছি।’’
ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দিল্লিতে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রায় চার মাস ধরে পরিষেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। ছ’দিন ধরে এক জন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসে আছেন। অথচ লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর ছ’মিনিট সময় দিলেন না দেখা করার জন্য।
আরও পড়ুন: কেজরীবালের সঙ্গে দেখা করার অনুমতিই পেলেন না মমতা
মমতা বলেন, ‘‘রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। কিন্তু কখনও কখনও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হয়। দিল্লিতে এসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আমি দেখা করেছি। কেজরীবালের সঙ্গেও দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হল না। রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকেও আমরা বিষয়টি তুলব। প্রধানমন্ত্রীকেও জানাব। এত দিন কেন্দ্রের উচিত ছিল, বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সমস্যার সমাধান করা।’’
আরও পড়ুন: কেজরীবালের ধর্নায় কি বদলাবে দিল্লির ভাগ্য
যদিও এ দিন ফেডারাল ফ্রন্ট নিয়ে একটি কথাও বলেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকরা এই সংক্রান্ত প্রশ্ন করলেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, চার মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ফেডারাল ফ্রন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার জন্য যে তৎপরতা শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এ বারের দিল্লি সফরে তাতে আরও কিছুটা অক্সিজেন পেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy