Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিশু বিক্রিতে সঙ্ঘের নিশানায় মিশনারিজ, সরব মমতা-ইয়েচুরি

নবজাতক বিক্রির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে রাঁচিতে মিশনারিজ অব চ্যারিটি পরিচালিত ‘নির্মল হৃদয়ে’র। তদন্তে নেমেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। কিন্তু তদন্ত শেষের আগেই মিশনারিজ অব চ্যারিটির নামে ‘শিশু পাচারে’র অভিযোগে সরব হয়েছে আরএসএস এবং বিজেপি।সঙ্ঘ ও বিজেপির এমন ভূমিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সীতারাম ইয়েচুরি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সীতারাম ইয়েচুরি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪৪
Share: Save:

নবজাতক বিক্রির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে রাঁচিতে মিশনারিজ অব চ্যারিটি পরিচালিত ‘নির্মল হৃদয়ে’র। তদন্তে নেমেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। কিন্তু তদন্ত শেষের আগেই মিশনারিজ অব চ্যারিটির নামে ‘শিশু পাচারে’র অভিযোগে সরব হয়েছে আরএসএস এবং বিজেপি। সঙ্ঘের দিল্লির প্রচার প্রমুখ রাজীব টুলি দাবি তুলেছেন, মাদার টেরিজার ‘ভারতরত্ন’ সম্মান ফিরিয়ে নেওয়া হোক! কারণ, ভারতীয় নাগরিকেরা চান না ‘ভারতরত্ন’ সম্মান কলঙ্কিত হোক। তাঁর ওই দাবিকে সমর্থন করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রক্ষ্মণ্যম স্বামী। সঙ্ঘ ও বিজেপির এমন ভূমিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

ঝাড়খণ্ডের রাজ্য চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি) ও কোতোয়ালি থানার তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, কমপক্ষে চার নবজাতককে বেআইনি ভাবে বিক্রি করেছে রাঁচীর ‘নির্মল হৃদয়’। সিডব্লিউসি-র চেয়ারপার্সন রূপা বর্মার দাবি, ‘‘পুলিশ ধৃতদের জেরা করে চারটির মধ্যে তিনটি শিশুর হদিশ পেয়েছে। বাকি এক জনের সন্ধান চলছে। আমরা পুরো ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।’’ ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিজিপি ডি কে পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘পুরো রাজ্য জু়ড়ে ১২টি হোম আছে মিশনারিজ অব চ্যারিটির। ওই হোমগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, গত ৫ জুলাই রাঁচীর নির্মল হৃদয় থেকে এক নবজাতককে বেআইনি ভাবে বিক্রির অভিযোগে দু’জন সিস্টারকে গ্রেফতার করেছিল কোতয়ালি থানার পুলিশ।

ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়ার মহাসচিব বিশপ থিয়োডর অবশ্য রাঁচীর আর্চ বিশপ হাউসে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, ‘‘বাচ্চা বিক্রির ঘটনায় নির্মল হৃদয়ের এক কর্মীর ভূমিকা থাকলেও থাকতে পারে। তবে নির্মল হৃদয়ের কোনও সিস্টার বাচ্চা বিক্রির সঙ্গে যুক্ত নন।’’ ঠিক এই যুক্তিই দিয়েছেন মমতা। তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘মিশনারিজ় অব চ্যারিটি বলতে মাদার টেরিজা বা সিস্টার নির্মলার কথা মনে পড়ে। একটি ঘটনা ঘটেছে, তাতে এক জন বা ব্যক্তিগত ভাবে কেউ দোষী হতে পারে। তা বলে একটি সংস্থাকে এ ভাবে জড়ানোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’ টুইটে মমতার আরও বক্তব্য, ‘‘বিজেপি কাউকে বাদ দিতে চায় না! নিন্দার ভাষা নেই।’’

কলকাতায় এ দিন ইয়েচুরিও বলেছেন, ‘‘মিশনারিজ অব চ্যারিটির নামে এমন প্রচার, ভাবা যায় না! এ সব সঙ্ঘ পরিবারের কাজ। বিশ্বাসযোগ্য কোনও অভিযোগ থাকলে তদন্ত হোক। কিন্তু এ ভাবে হেনস্থা করার অধিকার কারও নেই।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘আগেও এমন অভিযোগ ওদের বিরুদ্ধে উঠেছে। সরকারের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বার করা। তা না করে মুখ্যমন্ত্রী ভোটের জন্য অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE