এক পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে ঢুকে সশস্ত্র হামলা এবং তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন উত্তেজনা ছড়িয়েছে মণিপুরে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার নিজেদের অস্ত্র ‘নামিয়ে’ রেখে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখান মণিপুর পুলিশের কমান্ডোরা।
মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক (এসএসপি) অমিত কুমারের বাসভবনে আচমকাই হামলা চালায় ২০০ জনের একটি সশস্ত্র দল। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ইম্ফলের ওয়াংখেইতে রাতে নিজের বাড়িতেই ছিলেন অমিত। সবেমাত্র রাতের খাওয়া সারতে বসেছিলেন। সে সময় তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ে প্রায় ২০০ জন দুষ্কৃতী। বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। তাঁর বাড়িতে নিরাপত্তায় থাকা পুলিশকর্মীদের ভয় দেখানো হয়। তার পর তাঁদের চোখের সামনে থেকেই অমিতকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এমনকি, গুলিও চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
অপহরণের খবর পাওয়ার পরেই যৌথ ভাবে উদ্ধারকাজে নামে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী। দু’ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অমিতকে উদ্ধার করা হয়। বুধবার মণিপুর পুলিশের তরফে বিবৃতি জারি করে ঘটনার কথা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী অমিত কুমারের বাড়িতে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায়। ভাঙচুরও চালানো হয় বাড়িতে। সেই ঘটনার পরেই ‘প্রতীকী’ প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকেই এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ন’মাস আগে ‘তফসিলি তকমা’ ঘিরে মতবিরোধের জেরেই মণিপুরে মেইতেই-কুকি সংঘাত ছড়িয়েছিল। যা থেকে রাজ্য জুড়ে হিংসার সূচনা। গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার এই অশান্তি থামাতে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।