চেহারায় নাকি তাঁদের ভারতীয় বলে চেনা যায় না। তাই পরিচয়পত্র দেখানো সত্ত্বেও তাজমহলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানালেন মণিপুরের এক দল পড়ুয়া। তাজের রক্ষীদের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের এই গুরুতর অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ (এএসআই)।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। ইম্ফলের কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল পড়ুয়া সে দিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ তাজমহলে পৌঁছন। সঙ্গে ছিলেন শিক্ষকরাও। পড়ুয়াদের অভিযোগ, রক্ষীরা তাঁদের তাজে ঢুকতে বাধা দেয়। কারণ তাঁদের দেখে নাকি বিদেশি বলেই মনে হয়েছিল। উত্তরে পড়ুয়ারা যদিও নিজেদের পরিচয়পত্র ও কলেজের দেওয়া অনুমোদনের চিঠিও দেখান। তবু তাতে মন গলেনি রক্ষীদের। পড়ুয়াদের জানানো হয়, যাঁদের সঙ্গে আধার কার্ড রয়েছে শুধু তাঁরাই ঢুকতে পারবেন। বাধ্য হয়েই বিষয়টি পুলিশের কাছে জানান তাঁরা। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে পড়ুয়ারা তাজে ঢোকেন।
আসলে তাজমহলে বিদেশিদের জন্য প্রবেশমূল্য ১ হাজার টাকা, যেখানে ভারতীয়রা মাত্র ৪০ টাকাতেই ভেতরে যেতে পারেন। দেশের অনেক ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এই নিয়ম রয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীদের দাবি ছিল, টাকা বাঁচাতে পড়ুয়ারা হয়তো নিজেদের ভারতীয় বলে দাবি করছেন। সেই কারণেই পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া। তদন্তের খাতিরে এএসআই কর্তৃপক্ষ সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে চেয়েছেন।
ঘটনাটা সাম্প্রতিক হলেও অভিযোগটা পুরনো। দু’বছর আগে দিল্লির লাজপতনগরে স্থানীয় যুবকদের হাতে খুন হন অরুণাচলের তরুণ নিদো টানিয়াম। বর্ণবিদ্বেষের প্রতিবাদে ঝড় ওঠে রাস্তা থেকে সংসদে। কিছু দিন সব চুপচাপ। তার পর ফের অভিযোগ। সম্প্রতি দিল্লিতেই মণিপুরের এক মহিলাকে বিমানে উঠতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওই মহিলা অভিযোগ জানান, তাঁকে নাকি ঠিক ভারতীয়দের মতো দেখতে নয়— এই যুক্তিতে তাঁকে আটকে হেনস্থা করা হয়েছে। রবিবারের ঘটনায় আরও এক বার প্রমাণিত হল অবস্থা বদলায়নি। দেশের রাজধানী হোক বা তাজমহল দেশবাসীর জন্য আজও তা নিরাপদ নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy