Advertisement
E-Paper

দু’লক্ষ চাকরিও হয়নি, তির মোদীকে

প্লেনারি অধিবেশনের তৃতীয় দিনে বক্তৃতায় আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন মনমোহন। তিনি বলেন, ‘‘বছরে ২ কোটি চাকরির সুযোগ তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। বছরে ২ লক্ষ চাকরির সুযোগও তৈরি হয়নি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩২

অর্থনীতির হাল নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর মতে, নোটবন্দি ও জিএসটি চালুর মতো সিদ্ধান্তের ফলে অর্থনীতির বড় ক্ষতি হয়েছে। অবাস্তব স্বপ্ন দেখানো ছাড়া মোদী কিছুই করেননি।

প্লেনারি অধিবেশনের তৃতীয় দিনে বক্তৃতায় আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন মনমোহন। তিনি বলেন, ‘‘বছরে ২ কোটি চাকরির সুযোগ তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। বছরে ২ লক্ষ চাকরির সুযোগও তৈরি হয়নি। উনি বলছেন ছ’বছরে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। এটা অবাস্তব স্বপ্ন।’’ বস্তুত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি নিয়েই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান। তাঁর মতে, চিনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আছে ভারতের। কারণ, এ দেশ উপচে পড়ছে দক্ষ মানুষে। কিন্তু উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি না হলে তলিয়ে যাবে ভারতীয় অর্থনীতির উড়ানের স্বপ্ন।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ মনমোহন জানাচ্ছেন, ইউপিএ আমলে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৮ শতাংশ। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির হার ছিল ২.৮ শতাংশ থেকে ৩.৮ শতাংশের মধ্যে। কিন্তু ভারত যেন সেই বৃদ্ধির হার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।’’ মোদীকে খোঁচা দিয়ে মনমোহনের বক্তব্য, ‘‘ছ’বছরে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে হলে আর্থিক বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশ হওয়া প্রয়োজন। মোদীজি নিজেও জানেন এ সব অবাস্তব স্বপ্ন।’’

মনমোহনের দাবি, নোটবন্দির পরিকল্পনা আদৌ সঠিক ছিল না। জিএসটি-র আইন তৈরির ক্ষেত্রেও তাড়াহুড়ো করেছে মোদী সরকার। তার ফলে চাকরি গিয়েছে বহু মানুষের।

প্রায় একই সুরে মোদী সরকারের সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর মতে, দেশকে ‘অদক্ষ আর্থিক ম্যানেজার’ এবং বিজেপির ‘দমনমূলক আর্থিক নীতি’র হাত থেকে মুক্ত করা প্রয়োজন। তবে এক বছর পরে যে দলই ক্ষমতায় আসবে তাদের বড় আর্থিক সঙ্কট সামলাতে হবে। কারণ, মোদী
সরকার আরও বেশি মানুষকে দারিদ্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ব্যাঙ্কে বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পদ। তাঁর কথায়, ‘‘একমাত্র কংগ্রেসই দেশকে এই সমস্যা থেকে মুক্ত করতে
পারে। আমি ঔদ্ধত্য থেকে এ কথা বলছি না। আমরা এ কাজ আগে করেছি।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘২০০৮-০৯ সালের আন্তর্জাতিক আর্থিক সঙ্কটের সময়ে ব্যাঙ্কে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা মিটিয়েছিল সরকার।’’ নোটবন্দির ফলে যে টাকা তাদের হাতে এসেছে তা এখনও গোনা হচ্ছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘এর চেয়ে তিরুপতির হুন্ডি সংগ্রাহকেরা দ্রুত টাকা গোনেন?’’

ক্ষমতায় এলে অর্থনীতির হাল ফেরাতে কী কী পদক্ষেপ করা হবে তা নিয়ে আজ প্লেনারিতে চিদম্বরমের আনা একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে কংগ্রেস। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে ধনীদের আয়ের উপরে ৫ শতাংশ সেস বসিয়ে জাতীয় দারিদ্র দূরীকরণ তহবিল গড়া হবে। চাষিদের মর্যাদা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার, পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ করার কথা রয়েছে।

রাজনীতিকদের মতে, বিজেপি-বিরোধী ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অর্থনৈতিক অবস্থানের দিকে নজর রাখছেন বামপন্থীরা। তাই কংগ্রেসও দারিদ্র দূরীকরণের দিকে বিশেষ জোর দিয়েছে।

Manmohan Singh Narendra Modi Employment NDA government 84th Congress plenary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy