এক মাস কেটে গেল। টেবিলে পৌঁছয়নি কোনও ফাইল। হাতে কোনও কাজই নেই নরেন্দ্র মোদীর অনেক প্রতিমন্ত্রীর।
অথচ মন্ত্রিসভা তৈরি করেই খোদ প্রধানমন্ত্রী পইপই করে বলেছিলেন, ‘‘প্রতিমন্ত্রীদেরও কাজ দিতে হবে। পূর্ণমন্ত্রীরা সব কাজ নিজের হাতে নিয়ে বসে থাকলে হবে না। কাজ ভাগাভাগি করে নিতে হবে। যদি কোনও ফাইল দু’জনকেই সই করতে হয়, তা হলে একসঙ্গে বসে করুন। এতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।’’
তিনশো আসন পার করে মোদীর দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছে মে মাসে। ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ৯ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী আর ২৪ জন প্রতিমন্ত্রী রেখেছেন মন্ত্রিসভায়। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের হাতে পুরো মন্ত্রকটিই থাকে। সমস্যা শুধু প্রতিমন্ত্রীদের। কারণ, পূর্ণমন্ত্রীরা কোনও কাজ না-দিলে তাঁদের করার কিছু থাকে না। মোদীর আগের জমানাতেও এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। অনেকে নালিশও জানিয়েছিলেন সেই সময়।
সে কারণেই এ বারে নতুন মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী সকলকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, কী ভাবে তাঁর সরকার কাজ করে, মন্ত্রীরা কী করবেন, কী করবেন না। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, প্রতিমন্ত্রীদের হাতেও পর্যাপ্ত কাজ তুলে দেওয়া। কিন্তু এক মাস পরেও একাধিক প্রতিমন্ত্রী জানাচ্ছেন, তাঁদের মন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রীরা এখনও কোনও কাজ বরাদ্দ করেননি।
এমনই এক প্রতিমন্ত্রী বললেন, ‘‘এক মাস ধরে কোনও কাজ নেই। শুধু সংসদ চলছে বলে সেখানে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য কিছু প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’’ আর এক জনের বক্তব্য, ‘‘আগে বলা হয়েছিল, বাজেট পেশের পর সরকারের দিশা ও নীতি স্পষ্ট হবে। তার পরেই কাজের বরাদ্দ হবে। বাজেট সবে পেশ হয়েছে। এখন দেখা যাক, কত দিনে কাজ আসে!’’ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো কয়েক জন অবশ্য মন্ত্রিসভা গঠনের ১৫ দিনের মাথায় নিজের প্রতিমন্ত্রীদের কাজ বণ্টন করে দিয়েছেন।
অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে দু’জন প্রতিমন্ত্রী। জি কিষাণ রেড্ডি ও নিত্যানন্দ রাই। অমিত শাহ গোয়েন্দা বিভাগ, ক্যাবিনেট, রাষ্ট্রপতি ভবন সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিজের হাতে রেখে মন্ত্রকের ২১টি বিভাগ বণ্টন করে দিয়েছেন দুই প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে। জম্মু-কাশ্মীর, উত্তর-পূর্ব, সাইবার নিরাপত্তার মতো বিভাগ দেওয়া হয়েছে রেড্ডিকে। পুলিশ, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কিত বিষয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে বিদেশ বিভাগ দেওয়া হয়েছে নিত্যানন্দ রাইকে। সম্প্রতি, লোকসভায় নিজে উপস্থিত
থেকেও অমিত শাহ যে ভাবে প্রতিমন্ত্রীদের উত্তর দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, তার প্রশংসাও করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা। মোদীর প্রথম জমানাতেই প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন জিতেন্দ্র সিংহ। এ বারেও তিনি। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু অন্য কাজেও ব্যস্ত থাকেন, তাই মন্ত্রকের অনেক বিষয়ের ভারই জিতেন্দ্র সামলাচ্ছেন।