ছবি: এএফপি।
গ্রীষ্মের রুদ্ররোষ প্রশমনের ইঙ্গিত নেই। দেশের বড় একটি অংশ জুড়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত। অবধারিত ভাবে থাবা জোরদার হচ্ছে খরার। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, তীব্র দহন থেকে নিস্তার এখনই নেই। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশে তাপপ্রবাহ চলবে আরও অন্তত দু’দিন। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিদর্ভে আরও দিন তিনেক। দুঃসহ দহনের সঙ্গেই চলছে বৃষ্টির জন্য হাহাকার। বর্ষণের অভাবে বাড়ছে খরাকবলিত এলাকার আয়তন। যার প্রভাব কৃষিতে পড়বে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।
সোমবার দেশের উষ্ণতম এলাকা ছিল রাজস্থানের চুরু। সেখানে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে আট ডিগ্রি বেশি। একটি বেসরকারি ওয়েবসাইট দাবি করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের উষ্ণতম ২৫টি এলাকার মধ্যে ১১টি ভারতের। পাকিস্তানেরও কয়েকটি এলাকা সেই তালিকায় ঢুকেছে। দিল্লিতে একটি খাবার পরিবেশক সংস্থা ক্রেতাদের অনুরোধ করেছে, বাড়িতে ডেলিভারি বয় গেলে যেন এক গ্লাস জল দেওয়া হয়।
আবহবিদেরা জানান, এ বার গ্রীষ্মে অনেক জায়গাতেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। গোটা দেশের নিরিখে ১ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বর্ষার ঘাটতি প্রায় ২৪ শতাংশ। মধ্য ও দক্ষিণ ভারতের একাংশে এই ঘাটতি আরও বেশি। ১ জুন কেরল দিয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে বর্ষা ঢোকার কথা। কিন্তু তারও কোনও পাত্তা নেই। মৌসম ভবনের একটি সূত্রের দাবি, আরব সাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই বর্ষা ঢুকতে পারে কেরলে। তবে তার জোর কতটা হবে, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন আবহবিজ্ঞানীরা।
একটি সূত্রের দাবি, শুধু কৃষিকাজ নয়, খরার দাপটে জলাধারগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি টান পড়ছে ভূগর্ভের জলের ভাঁড়ারেও। ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেচের সমস্যার পাশাপাশি পানীয় জলের সঙ্কটও বাড়তে পারে। মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার এক কৃষক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সংসারের পানীয় জলের জোগাড় করতে ভোরে গ্রামের বাইরে কুয়োয় লাইন দিতে হয়। ভোরে লাইন না-দিলে তিন ঘণ্টার মধ্যে জল শুকিয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে আবহবিজ্ঞানী থেকে গ্রামের চাষি, সকলেই চেয়ে আছেন বর্ষার দিকে। কবে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গিয়ে জল ঝরাবে, ফুটিফাটা মাটিতে তারই অপেক্ষা।
কিন্তু বর্ষা যদি জোরালো না-হয়? ‘‘বর্ষা যদি দুর্বল হয়, বৃষ্টিপাতের ঘাটতি আরও বাড়বে। সে-ক্ষেত্রে এই বিপর্যয় সামাল দেওয়া কঠিনতর হবে,’’ বলেন এক আবহবিজ্ঞানী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy