Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Meghalaya

৪২ দিন পর মেঘালয়ের খনি থেকে উদ্ধার এক শ্রমিকের পচাগলা দেহ

রীতি মেনে শেষকৃত্য সারতে চান বলে ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনের কাজে আর্জি জানিয়েছে মৃতদের পরিবার পরিজনরা।

খনি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃতদেহ। ছবি: পিটিআই।

খনি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃতদেহ। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
শিলং শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:৫০
Share: Save:

চাপা পড়েছিলেন দেড়মাস আগে। এতদিনে মেঘালয়েখনি থেকে উদ্ধার হল এক শ্রমিকের পচাগলা দেহ। বৃহস্পতিবার ৩৭০ ফুট গভীর খনি থেকে দেহটি উদ্ধার করে ভারতীয় নৌবাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর যৌথ দল। মৃতদেহটির নাম-পরিচয় এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি, সেটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহেই মৃতদেহটি চোখে পড়ে উদ্ধারকর্মীদের। যার পর বুধবারই ক্রেনের সাহায্যে সেটি তুলে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে বিপত্তি বাঁধে। ক্রেনের হুকে কোনওরকমে দেহটিকে আটকানো গেলেও সেটি তুলে আনার সময় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খসে পড়তে শুরু করে। তার জেরে হুক থেকে নীচে পড়ে যায় দেহের বাকি অংশও। তবে একেবারে ৩৭০ ফুট নীচে সেটি পড়েনি। বরং ১০০ ফুট গভীরে গিয়ে আটকে যায়। এ দিন উদ্ধারকর্মী ও ক্রেন নামিয়ে সেখান থেকেই দেহটি তুলে আনা হয়। পূর্ব জয়ন্তিয়া পার্বত্য জেলার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সেটি তুলে দেওয়া হয় সাইপাং থানার হাতে। সেখান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় সিভিল হাসপাতালে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ মেঘালয়ে বেআইনি খননকার্য জারি আজও। সেরকমই এক ব্যবসায়ীর হয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর কয়লা তুলতে নেমেছিলেন জনা কুড়ি শ্রমিক। কিন্তু ভুলবশত খনির দেওয়ালে ছেনির ঘা বসানোয় বিপত্তি বাঁধে। দেওয়ালের গর্ত দিয়ে পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীর জল ঢুকে পড়ে খনির মধ্যে। বিপদ টের পেয়ে তড়িঘড়ি খনি থেকে বেরিয়ে আসায় প্রাণে বেঁচে যান ৫ জন। তবে সলিল সমাধি ঘটে প্রায় ১৫ জনের। বেআইনি খনিতে খননকার্য চালানোর কথা প্রকাশ পেলে বিপদ বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কায় প্রথমে বিষয়টি চেপে যান বাসিন্দারা। গোপনসূত্রে বিষয়টি প্রশাসনের কানে গেলে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। তবে তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আবার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকাতেও বিলম্ব হয় উদ্ধারকাজে। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের নজরে এলে সক্রিয়তা দেখায় প্রশাসন। উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। যার পর যৌথভাবে উদ্ধারকাজে হাত লাগায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা। তাসত্ত্বেও প্রথম মৃতদেহটি বের করতেই সময় লেগে গেল ৪২ দিন।

আরও পড়ুন: মোদীর বিরুদ্ধে প্রিয়ঙ্কাকেই চাই, বারণসীতে মিছিল করে দাবি কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের​

আরও পড়ুন: অফিস থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে গ্রেফতার করল সিবিআই​

রীতি মেনে শেষকৃত্য সারতে চান বলে ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনের কাজে আর্জি জানিয়েছে মৃতদের পরিবার পরিজনরা। তাই বাকি দেহগুলিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। জল ভর্তি খনি থেকে দেহ টেনে বের করতে নামানো হয়েছে রিমোটচালিত বিশেষ যান (আরওভি), যার ক্যামেরার সাহায্যে খনির মধ্যে কঙ্কালের দেখা পেয়েছেন ডুবুরিরা। খনির জলে প্রচুর পরিমাণ সালফার থাকায় মৃতদেহ তাড়াতাড়ি পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আরওভি-র ক্যামেরায় যে কঙ্কালগুলির দেখা মিলেছে, সেগুলি সাম্প্রতিক নিখোঁজ শ্রমিকদের কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meghalaya Illegal Mine Deaths rescue operation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE