Advertisement
০৬ মে ২০২৪

স্বাধীনতা দিবস পণ্ডের হুমকি জঙ্গিদের

কেন্দ্রের নির্দেশে রাজ্য সরকার এ বার তিন দিন ব্যাপী স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই পাশাপাশি, আলফা-স্বাধীনও স্বাধীনতা দিবস বানচাল করার পাল্টা হুমকি দিয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চও স্বাধীনতা দিবস বয়কট করার ডাক দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০২:৩৭
Share: Save:

কেন্দ্রের নির্দেশে রাজ্য সরকার এ বার তিন দিন ব্যাপী স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই পাশাপাশি, আলফা-স্বাধীনও স্বাধীনতা দিবস বানচাল করার পাল্টা হুমকি দিয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চও স্বাধীনতা দিবস বয়কট করার ডাক দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনসুকিয়ার ফিলোবাড়িতে গত রাতে আলফা যে ভাবে হিন্দিভাষীদের উপরে গুলি চালিয়ে পালাল, তাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পুলিশের নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জঙ্গি হানার আগাম খবর পুলিশের কাছে ছিল। ঘটনার আগে পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের সতর্কও করেছিল।

পুলিশ জানায়, গত কাল ফিলোবাড়ির ১১ নম্বর বামুনগাঁও গ্রামে পৌনে আটটা নাগাদ পায়ে হেঁটে এসেই হামলা চালায় আলফা-স্বাধীনের দলটি। উদয় অসমের নেতৃত্বে হামলা চলে। গুলি চালিয়ে হেঁটেই জঙ্গিরা অরুণাচল সীমানার দিকে চলে যায়। ঘটনায় মারা যান কিশোরী শাহ ও তাঁর ছেলে রাজেশ শাহ। ওই ঘটনা নিয়ে আজ বিধানসভায় রাজ্য সরকারের তরফে মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি জানান, জঙ্গিরা পাঁচ মিনিট ধরে গুলি চালায়। নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ও জখমদের ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আলোচনাপন্থী আলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেতিয়া ঘটনার নিন্দা করেছেন।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছে, গত কাল বিকেলেই পুলিশ এসে জানিয়েছিল গ্রামে হামলা হতে পারে। সকলে যেন সতর্ক থাকে। বামুনগাঁওয়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ জঙ্গি হানার আগাম আঁচ পেয়েও কেন পাহারা বসায়নি? মুখ্যমন্ত্রী গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মন্ত্রী অতুল বরা ও পল্লবলোচন দাসকে তিনসুকিয়ায় পাঠিয়েছেন।

আজ নিহত পিতা-পুত্রের দেহ আটকে গ্রামের মানুষ দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী ও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘটনাস্থলে এসে হিন্দিভাষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। হিন্দিভাষী হত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠনের ডাকে এ দিন উজানি অসমে বন্‌ধ ও পথ অবরোধ করা হয়। ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

অন্য দিকে, কার্বি আংলং জেলার রংবংবে থানায় গত কাল রাতে রহস্যজনক ভাবে এক কনস্টেবলের মৃত্যু হয়। এসপি দেবজিৎ দেউড়ি জানান, রাতে পুলিশ ব্যারাকে গুলির শব্দ হয়। প্রথমে ভাবা হয়েছিল কেপিএলটি জঙ্গিরা থানা আক্রমণ করেছে। অন্য জওয়ানরা শব্দের উৎস সন্ধানে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন রাতুল ডেকা ও পবনজ্যোতি বরা নামে দুই কনস্টেবল। রাতুলবাবু ঘটনাস্থলেই মারা যান। পবনজ্যোতির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে দু’জন গুলিবিদ্ধ হলেন, তা পরিষ্কার নয়। দেউড়ি জানান, বাইরে থেকে থানা আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। গুলি ভিতরেই চলেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ডিআইজি অখিলেশ সিংহও ঘটনাস্থল ঘুরে জঙ্গি হানার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন।

গুয়াহাটির রানিতে আজ একটি ব্যাগ থেকে মিলেছে তিনটি তাজা গ্রেনেড ও ফিউজ তার। পুলিশের সন্দেহ মোটরবাইকে আসা জঙ্গিরা তল্লাশির মুখ পড়ে গ্রেনেডগুলি ফেলে পালিয়েছে। সেগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Militants Independence Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE