কলেজ ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ালেন শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি।
সম্প্রতি যোরহাটের জে বি কলেজের এক ছাত্রীকে কয়েকজন যুবক হেনস্থা করে। তিনি প্রথমে ফেসবুকে এর বিহিত চেয়ে পোস্ট লেখেন। কলেজের সহস্রাধিক ছাত্রী রাস্তা আটকে বিক্ষোভে নামে। পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অবশ্য কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। গত কাল বিপিএফ বিধায়ক কমলি বসুমাতারি বিধানসভায় প্রসঙ্গটি তোলেন, রাজ্যে মেয়েদের উপরে হেনস্থা বাড়ছে। গুয়াহাটিতেও গত কয়েক বছর বেশ কয়েকটি এমন ঘটনা ঘটলেও সরকার ও পুলিশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল মন্তব্য বন্ধ হয়নি। বীরাঙ্গনা বাহিনী গড়লেও জেলায় তাঁদের তেমন সক্রিয়তা নেই। জবাবে পাটোয়ারি নারী সুরক্ষা প্রসঙ্গের চেয়ে বেশি জোর দেন মেয়েটির রাজনৈতিক মতাদর্শের উপরে। জানান, মেয়েটি এসএফআই সদস্য। তাঁর বক্তব্য, প্রগতিশীল যুব প্রজন্মকে নিয়ে খুব সমস্যা। মেয়েটি ফেসবুকে না লিখে পুলিশের কাছে আগে যেতে পারত। তা না করে সে ভুল করেছে। পুলিশ নারী সুরক্ষা নিয়ে কী কী ব্যবস্থা করছে তাও বিশদে জানান তিনি।
এখানেই শেষ নয়, তাঁর লিখিত বিবৃতি অনুযায়ী, পুলিশ ‘অপহৃতা’ মেয়েটির জবানবন্দি নিয়েছে। মন্ত্রীর বক্তব্য জেনে উত্তেজিত মেয়েটি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দল, কৃষকমুক্তি সংগ্রাম সমিতি সকলেই মন্ত্রীর মৌখিক ও লিখিত মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়েছে। সকলেরই বক্তব্য, খামোকা ছাত্রী হেনস্থার ঘটনায় রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শ টেনে আনা ঠিক হয়নি। এসএফআইয়ের তরফে মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি না করে, মন্ত্রীর এ ভাবে বামপন্থার কথা টেনে আনা নিষ্প্রয়োজন। তিনি আসল সমস্যার থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। মেয়েটির বক্তব্য, ‘‘যদি পাটোয়ারি মন্ত্রী না হতেন এবং তাঁর নিজের মেয়ের সঙ্গে এই কাণ্ড ঘটত, তাহলেও কি তিনি এমনই মন্তব্য করতেন? বাইকবাহিনীর তাণ্ডব ও মেয়েদের উপরে অত্যাচার এখন যোরহাট শহরের বড় সমস্যা। তা না মিটিয়ে এ ভাবে রাজনীতি করছেন তিনি!’’ পরে পাটোয়ারি জানান, পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। স্পেশ্যাল ডিজি কুলধর শইকিয়া নিজে যোরহাটে গিয়ে তদন্তের তদারক করছেন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মেয়েদের হস্টেল ও কলেজের পাশে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে মহিলা পুলিশের সংখ্যাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy