ভারতের সেনাবাহিনীর ১৫ বছরের আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা প্রকাশ করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। অপারেশন সিঁদুরের চার মাস পরে প্রকাশিত এই পরিকল্পনায় প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্রের পাশাপাশি উল্লেখ রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, শব্দের চেয়ে বেশি গতিতে চলা প্রযুক্তি ও পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধের।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়ে প্রথম ড্রোনের লড়াই দেখেছে উপমহাদেশ। সেনার পরবর্তী পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, দেশে তৈরি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভবিষ্যতের যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, নৌসেনার জাহাজের জন্য পরমাণু জ্বালানি ব্যবহারের ব্যবস্থা, পরবর্তী প্রজন্মের ট্যাঙ্ক ও চালকহীন যুদ্ধাস্ত্র কেনার উপরে জোর দেবে ভারত।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেনা ১৮০০ ভারী ট্যাঙ্ক, ৪০০টি হাল্কা ট্যাঙ্ক, ৬ লক্ষ গোলা ও বেশ কিছু চালকহীন যুদ্ধাস্ত্র কিনতে আগ্রহী। একটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ, ১০টি পরবর্তী প্রজন্মের ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির জাহাজ, ১০টিরও বেশি ‘ল্যান্ডিং প্ল্যাটফর্ম’ ও উন্নত শ্রেণির হেলিকপ্টার কিনতে চায় নৌসেনা। বায়ুসেনা চায় ২০টি অতি উচ্চতার উপযোগী বিমান, ৩৫০টি বিভিন্ন কাজে ব্যবহারযোগ্য ড্রোন, উচ্চশক্তির লেজ়ার ব্যবস্থা ও অন্য উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধাস্ত্র।
পরিক্লপনায় সাইবার সুরক্ষা, উপগ্রহ ভিত্তিক যোগাযোগ, ড্রোন প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে বাহিনীর আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্য, ‘‘যুদ্ধাস্ত্রের উন্নয়নে সব সময়েই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। আমরা এখন প্রযুক্তির নজিরবিহীন উন্নতি দেখছি। এর ফলে আক্রমণাত্মক সাইবার অভিযান, স্বয়ংক্রিয় চালকহীন ব্যবস্থা, তথ্যের লড়াই, মহাকাশ যুদ্ধ ও অন্য উন্নতি দেখা যাচ্ছে।’’
মন্ত্রকের মতে, ‘‘রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রের উপরে বৈপ্লবিক প্রভাব ফেলবে। দেশের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ ও দায়িত্ব রয়েছে। ফলে সেনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও বেশি সরকার ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে অংশীদারি প্রয়োজন। ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলির উচিত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোরচেষ্টা করছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)