ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী। এই সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। সোমবার নয়াদিল্লিকে এই মর্মে বার্তা দিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এই বার্তা পাঠানোর সময়কে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। রবিবার চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। ভারতীয় সময় বেলা ১২টার কিছু পরে মোদী-পুতিন বৈঠক শুরু হয়। আর তার ঠিক আধ ঘণ্টা আগে, সাড়ে ১১টায় ভারতের মার্কিন দূতাবাসের সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হয় আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োর বার্তা।
ওই বার্তায় রুবিয়ো বলেছেন, “আমাদের (ভারত এবং আমেরিকা) বোঝাপড়ার ভিত্তি হল দুই দেশের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক। আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কে দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে।” ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি এখনও পর্যন্ত থমকে রয়েছে। তার উপর রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য ভারতের অধিকাংশ পণ্যের উপর আরও ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) আমদানি শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কে আমেরিকার ‘দারুণ সম্ভাবনা’ দেখাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সমাজমাধ্যমে ভারতের মার্কিন দূতাবাসের পোস্টে বলা হয়েছে, ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক একবিংশ শতকে দৃষ্টান্তস্বরূপ।
দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চিনের ‘আধিপত্য’ এবং প্রভাব কমাতেই ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারি বৃদ্ধি করেছিল আমেরিকা। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা ‘আগ্রাসন’ রুখতে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন চতুর্দেশীয় অক্ষ ‘কোয়াড’-এরও অন্যতম সদস্য ভারত। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্কনীতি ভারতের সঙ্গে সেই বোঝাপড়াকে ক্ষুণ্ণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল আমেরিকার অন্দরেই। অন্য দিকে, ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের আবহে সংঘাতের পুরনো ইতিহাস ভুলে কাছাকাছি এসেছে ভারত-চিন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই পড়শি দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একমত হয়েছেন মোদী এবং জিনপিং দু’জনেই। চিনে ভারত এবং চিনের সঙ্গী হয়ছে নয়াদিল্লির পুরনো বন্ধু রাশিয়াও। অনেকেরই মতে, চিনের তিয়ানজিনে এসসিও-র বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষ মাত্র। আসলে সেই সম্মেলনে মোদী, পুতিন আর জিনপিঙের কাছাকাছি আসা বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ত্রিদেশীয় অক্ষ তৈরির সম্ভাবনা উস্কে দিচ্ছে। সেই আশঙ্কাতেই কৌশলগত বন্ধু ভারতকে আমেরিকা ইতিবাচক বার্তা দিল কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।