সনিয়া-রাহুল গাঁধীদের প্যাঁচে ফেলতে নতুন ফন্দি আটছেন নরেন্দ্র মোদী।
মোদী সরকার কিস্যুটি করছে না- বিরোধীদের আক্রমণের এই ঝাঁঝ কমাতে এ বারে উন্নয়নের কাজে সনিয়া-রাহুলকেও সুকৌশলে শরিক করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের মন্ত্রীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর নির্বাচনী কেন্দ্রে কোন কোন গরিব পরিবারের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের সুফল পৌঁছানো উচিত, তা কংগ্রেসের এই নেতাদের থেকেই জেনে নেওয়া হোক।
বিজেপি সূত্রের মতে, এর ফলে এক ঢিলে চার পাখি মারা যাবে। এক, সনিয়া-রাহুল যদি কোনও তালিকাই না দেন, তা হলে বিজেপি ‘অসহযোগিতা’র প্রচার করতে পারবে। দুই, যদি তাঁদের তালিকা দেওয়ার পরেও আরও অনেক লোক বঞ্চিত থেকে যান, তাতেও রাজনৈতিক প্রচারের সুযোগ থেকে যাচ্ছে। তিন, যদি অনেক মানুষের তালিকা আসে তাঁদের থেকে, সে ক্ষেত্রেও বিজেপি বলতে পারবে এত দিন সাংসদ থেকেও নিজেদের নির্বাচনী কেন্দ্রে কত লোককে গরিব রেখেছে কংগ্রেস। আর চার, এক বার মোদীর উন্নয়ন কর্মসূচিতে সামিল হলে তৃণমূল স্তরে কোনও কাজ হচ্ছে না— এমন অপবাদও দিতে পারবেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে ইতিমধ্যেই পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং তাঁর মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট হাতে-গরম একটি বিষয়ে চিঠি লিখে ফেলেছেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করে দেশের পাঁচ কোটি গরিব পরিবারকে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আজও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও ধর্মেন্দ্র প্রধান এই প্রকল্প নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন গুজরাতে। ধর্মেন্দ্র আজ জানান, তিনি সনিয়া ও রাহুলকে চিঠি লিখেছেন তাঁদের নির্বাচনী কেন্দ্রের মানুষদের এই প্রকল্পে সামিল করার জন্য। তবে গোটা বিষয়টি যাতে নিছক রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মনে না হয়, তার জন্য উত্তরপ্রদেশের সব সাংসদকেই চিঠি লেখা হয়েছে। ধর্মেন্দ্র বলেন, ‘‘আপাতত উত্তরপ্রদেশের সাংসদদের চিঠি লেখা হয়েছে। পরে সব রাজ্যের সাংসদকেই চিঠি লিখব।’’
কিন্তু বিজেপি সূত্র কবুল করছে, প্রথমে উত্তরপ্রদেশ বেছে নেওয়া হয়েছে, যাতে সনিয়া ও রাহুলকে সামিল করার উদ্দেশ্যেই। দলের সূত্রেও এ-ও দাবি, স্মৃতি ইরানিকেও অমেঠী কেন্দ্রের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। একবার রাহুলের থেকে তালিকা আসার পর স্মৃতির তালিকার সঙ্গে সেটি যাচাই করা হবে। লক্ষ্য স্পষ্ট, বিজেপি এটিকে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক কাজেই ব্যবহার করা হয়েছে। এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা অবশ্য বলেন, এই চিঠির ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই। বিষয়টি তিনি খোঁজ নেবেন।
কিন্তু বিজেপি নেতারা জানেন, সরকারের দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকার যখন নিজেদের সাফল্য মেলে ধরবে, সেই সময় কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলি পাল্টা রিপোর্ট কার্ড পেশ করবে। খুঁজেপেতে সরকারের ব্যর্থতাগুলিই বড় করে দেখাবে। আগের বারেও একই কাজ করেছিল কংগ্রেস। ফলে সেটি প্রতিহত করতেই এখন থেকেই নতুন ফন্দি আঁটা শুরু করল মোদী সরকার। উন্নয়নের কাজে বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে চলার আবেদন অনেকদিন ধরেই প্রকাশ্যে করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বারে সেটিকেই আনুষ্ঠানিক মোড়ক দিয়ে রুটি সেঁকতে চাইছেন তিনি।
আরও পড়ুন— ‘অচ্ছে দিন’ উধাও, দু’বছর পূর্তিতে মোদীদের স্লোগান ‘একটু হাসুন’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy