ক্ষমতায় এসে যোজনা কমিশন ভেঙে দিয়ে নরেন্দ্র মোদী বুঝিয়েছিলেন, তিনি অল্প অল্প করে বদলে নয়, আমূল পরিবর্তনে বিশ্বাস করেন। গত দু’বছরে সেই মোদী সরকারই বারবার সংস্কারে হোঁচট খাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আজ যোজনা কমিশন ভেঙে তৈরি হওয়া নীতি আয়োগ-এ গিয়ে মোদী ফের দাবি করলেন, তিনি এখনও আমূল পরিবর্তনে বিশ্বাসী।
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তুলে দিয়ে এ বার ১৫ বছরের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ তৈরি করছে নীতি আয়োগ। যা আগামী অর্থ বছর থেকে কার্যকর হবে। তারই প্রস্তুতির জন্য আজ নীতি আয়োগের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মোদী বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করার সময় নেই। এখন আমূল বদলের দরকার। আমূল নীতির সংস্কার করেই তা সম্ভব।’’ যেন তাঁর সংস্কারের সাহস নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন, সেই সুরেই মোদী বলেন, ‘‘আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার লোক, আমার সেই সাহস রয়েছে।’’
প্রথমে ঠিক ছিল, বৈঠকে শুধুমাত্র ১৫ বছরের ভিশন ডকুমেন্ট নিয়েই আলোচনা হবে। কিন্তু বুধবার রাতে মোদী জানান, তিনি গত পাঁচ ছয় দশকের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আমলে কী ভুল হয়েছে, এবং সেই ভুল থেকে কী শিক্ষা নিতে হবে, তা বুঝতে চান। নীতি আয়োগের ভাইস-চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগাড়িয়া জানান, এমন অনেক নীতি তৈরি হয়েছে, যার উল্টো ফল নিয়ে ভাবনাচিন্তা হয়নি। ফলে তার সুফলের থেকে বেশি কুফল মিলেছে। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে নীতি আয়োগে আরও বেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান পানাগাড়িয়া।
মোদী নীতি আয়োগের কর্তাদের বলেছেন, যে ভিশন ডকুমেন্ট তৈরি হবে, তার প্রভাব যেন শুধু ১৫ বছর নয়, আগামী ১০০ বছরে মেলে। কিন্তু কোন দিকে লক্ষ্য রেখে তৈরি হচ্ছে ১৫ বছরের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’? নীতি আয়োগের সদস্য বিবেক দেবরায়ের জবাব, এখনও নথি চূড়ান্ত হয়নি। তবে মোটের উপর যে চারটি লক্ষ্য থাকবে, তা হল, এক, দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, দুই, তাদের জন্য পরিকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করে ক্ষমতায়ন, তিন, উদ্যোগপতিদের বেড়ে ওঠার জন্য পরিবেশ তৈরি এবং চার, একেবারে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য নিখুঁত ভর্তুকির ব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে বিচার করে ও দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে নজর রেখে এই ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ তৈরি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy