মোদী-দিদি আঁতাঁতের জল্পনায় আরও অক্সিজেন জুগিয়ে সংসদে প্রকাশ্যে বিজেপির হয়ে মাঠে নেমে পড়ল তৃণমূল। সমস্ত নিয়ম ভেঙে দীর্ঘক্ষণ রাজ্যভার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দিতে থাকায় অধিবেশন কক্ষ থেকে বার করে দেওয়া হল তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে। সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ শুরু করে দিল বিজেপি। তৃণমূল সাংসদকে নয়, কংগ্রেস সাংসদদের বার করে দেওয়া উচিত, বলল বিজেপি।
অগাস্টাওয়েস্টল্যান্ড কাণ্ড নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার জন্য সোমবার সকালেই নোটিস দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ১১টা থেকে শুরু হওয়া জিরো আওয়ারে সুখেন্দু এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাননি। বরং নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে কেজি বেসিন কেলেঙ্কারির যে অভিযোগ উঠেছিল, জিরো আওয়ারে তা নিয়েই হইচই শুরু করে দেন কংগ্রেস সাংসদরা। পাল্টা হইচই করতে থাকেন তৃণমূল এবং বিজেপি সাংসদরাও। তুমুল হইচইতে জিরো আওয়ারে এক বার রাজ্যসভা মুলতুবিও করে দিতে হয়। এর পর প্রশ্নোত্তর পর্বে সুখেন্দুশেখর রায়কে অগাস্টাওয়েস্টল্যান্ড ইস্যু নিয়ে বলার সুযোগ দেন চেয়ারপার্সন হামিদ আনসারি। নিজের বক্তব্যে নাম না করে সনিয়া গাঁধী এবং আহমেদ পটেলকে সুখেন্দু আক্রমণ করায় রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদরা।
সুখেন্দুশেখর রায়ের বলার সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর যখন অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, তখনও সুখেন্দু বার বার উঠে আলোচনায় বাধা দিতে থাকেন। তিনি বার বার অগাস্টাওয়েস্টল্যান্ড ইস্যু তুলে ধরে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে থাকেন। আনসারি সুখেন্দুকে বার বার বসতে বলা সত্ত্বেও তিনি বসেননি। হামিদ আনসারি এর পর কড়া পদক্ষেপ নেন। তিনি জানান, সুখেন্দুশেখর রায়ের বিরুদ্ধে সংসদের ২৫৫ নম্বর বিধি প্রয়োগ করা হচ্ছে। সভার কাজে বার বার বাধা দেওয়ায় তাঁকে সারা দিনের মতো সভা থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
প্রায় সাফ তৃণমূল
চেয়ারপার্সনের এই নির্দেশের পর সভা থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন সুখেন্দু। প্রতিবাদে অন্য তৃণমূল সাংসদরাও রাজ্যসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু বিজেপি তৃণমূলের হয়ে ময়দানে নামে। হামিদ আনসারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বিজেপি সাংসদরা। তাঁদের দাবি, যে ধারা সুখেন্দুশেখর রায়ের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হল, সেই ধারা কংগ্রেস সাংসদদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিত।
তৃণমূল আর বিজেপি এই ঐক্যবদ্ধ লড়াই এ রাজ্যে অস্ত্র তুলে দিয়েছে বাম-কংগ্রেসের হাতে। দীর্ঘদিন ধরেই মোদী-দিদি গোপন আঁতাঁতের অভিযোগ তুলছেন জোট নেতারা। সোমবারের ঘটনার পর বাম-কংগ্রেস বলছে, বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাঁত আর গোপন নেই। গোটা দেশ দেখতে পাচ্ছে এই আঁতাঁত। বাংলায় পরাজয় নিশ্চিত বুঝে বিজেপি আঁকড়ে বাঁচচে চাইছে তৃণণূল। বলছেন কংগ্রেস নেতারা। রাজ্যে শেষ দফার ভোটগ্রহণের আগে বিজেপির পাশে থাকার বার্তা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছে তৃণমূল, বলছেন বামেরা।