মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে তিনিই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে দু’পক্ষের বৈঠক হয়েছিল। দিন কাটতেই সেই মোদীরই সমালোচনায় সরব হলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
গত কাল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নিমন্ত্রণ নিয়ে উৎসুক ছিল তামাম ভারতের সংবাদমাধ্যম। বিজেপি-র সঙ্গে বামপন্থীদের নতুন সম্পর্কের ‘রসায়ন’ খুঁজতে শুরু করেন অনেকে। কেউ কেউ বলেছিলেন ‘মানিকের ভোলবদল!’
কিন্তু আজ মোদী সরকারকে ‘জনবিরোধী’ বলে চিহ্নিত করে সব জল্পনা শেষ করলেন মানিকবাবু। তিনি বললেন, “কেন্দ্রে সরকার গঠনের পর থেকে মোদী মন্ত্রিসভার একের পর এক সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়ছে দেশের জনসাধারণ।”
রাজ্যের শাসক সিপিএম নেতাদের একাংশের বক্তব্য, গত কাল মোদীকে আমন্ত্রণের কারণ ছিল ত্রিপুরার উন্নয়ন। মানিকবাবুর এ দিনের সমালোচনা দলীয় আর্দশগত।
রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে হাজার হাজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আশ্বাস দিয়েছিলেন ক্ষমতা পেলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমাবেন। ছ’মাস ধরে দেশ চালাচ্ছেন তিনি। তাঁর প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি।” মানিকবাবুর কথায়, “পূর্বতন ইউপিএ সরকারের থেকেও ভয়ানক রাস্তায় এগোচ্ছে মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার। পুঁজিপতিদের কর ছাড় দিচ্ছেন। কিন্তু জনহিতকর কাজে তাঁর মন নেই।”
এই প্রসঙ্গে গত কাল তাঁর মন্ত্রিসভার সঙ্গে মোদীর সাক্ষাতের কথা তোলেন মানিকবাবু। তিনি বলেন, “রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা গণবণ্টন ব্যবস্থায় ১৫টি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীকে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। মোদী সব শুনে শুধু মুচকি হেসেছেন।”
এ দিন থেকে গণবণ্টনের ক্ষেত্রে ডাল এবং ভোজ্য তেলে ভর্তুকি দেওয়া শুরু করল ত্রিপুরা সরকার। তারই সূচনা করেন মানিকবাবু। কয়েক মাস আগে রাজ্য সরকার ওই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল। খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা জানান, এ জন্য সরকারের গুদামে তখন প্রয়োজনীয় পরিমাণ ডাল, তেল ছিল না। তা জোগাড় করার পরই বণ্টন শুরু হল। ভর্তুকির টাকা সরাসরি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকারি সূত্রের খবর, কার্ডপিছু প্রত্যেক গ্রাহককে প্রতি মাসে মুসুর ও মুগ ডালের জন্য ১০ টাকা ও ভোজ্য তেলের জন্য ১৫ টাকা করে ভর্তুকি দেওয়া হবে। এ জন্য বছরে রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত ৪২ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রায় ৯ লক্ষ ৬০ হাজার পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy