গুজরাত ভোটে বিজেপির আসন কমে যাওয়ায় দিল্লির মন্ত্রিসভা নিয়েও চাপে পড়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী। অরুণ জেটলি-সহ তিন জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এখন তাঁদের মধ্যে এক জনকে জেতাতে কাঠখড় পোহাতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। কারণ, যথেষ্ট সংখ্যা নেই তাঁর নিজের রাজ্যের বিধানসভাতেই।
গুজরাতের মোট চারটি আসন খালি হচ্ছে এপ্রিলের গোড়ায়। ওই চারটি আসনে নির্বাচিত সাংসদেরা হলেন— জেটলি, পুরষোত্তম রূপালা, মনসুখ মাণ্ডবীয়র মতো তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং এক সাংসদ শঙ্কর ভেগাড়। কিন্তু এখন বিধানসভায় যে অঙ্ক দাঁড়াল, তাতে পরের ভোটে বিজেপি নিশ্চিত ভাবে ফিরে পাবে এর মধ্যে দু’টি আসন। ফলে এক মন্ত্রীকে জিতিয়ে আনতে এখন বিজেপিকে হয় অন্য রাজ্য খুঁজতে হবে, অথবা মাস কয়েক আগের মতোই (যে বার কংগ্রেসের আহমেদ পটেল জিতে যান) গুজরাতে ফের রাজ্যসভার যুদ্ধে নামতে হবে।
রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় মোদী সরকারের অনেক বিলই ধাক্কা খেয়েছে রাজ্যসভায়। তাই গুজরাতে ভোটের প্রচারেও মোদী বলেছিলেন, বিধানসভায় বেশি আসন জিতে রাজ্যসভায় সংখ্যা বাড়ানো তাঁর লক্ষ্য। কিন্তু ফল হল উল্টো। যা দেখে কংগ্রেস বলছে, গুজরাতে রাজ্যসভার ভোটে যুদ্ধের কোনও অবকাশই নেই। চারটির মধ্যে দু’টি আসন পাবে কংগ্রেস, দু’টি বিজেপি। আহমেদ পটেলের সময়ে বিজেপি দল ভাঙিয়ে নিয়ে কংগ্রেসকে হারানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। সেই সময়ে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের ৪৩ জন বিধায়ক ছিলেন। এখন কংগ্রেসের নিজের ৭৭টি আসনের সঙ্গে অন্যদের মিলিয়ে মোট ৮৩ জন বিধায়ক রয়েছেন। বিজেপির ৯৯। ফলে আগের খেলা আর খেলতে পারবে না বিজেপি।
ভোটের পরে এই সঙ্কট প্রকট হতেই গুজরাতে ‘মুখ বদল’ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে বিজেপিতে। মুখ্যমন্ত্রী পদে সম্ভাব্যদের মধ্যে উঠে এসেছে রূপালা-মাণ্ডবীয়দের নাম। যদি অন্য রাজ্য থেকে জিতিয়ে আনা কঠিন হয়, তা হলে অন্তত বিধানসভায় জিতিয়ে এনে এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা যেতে পারে কি না, জল্পনা চলছে। তবে বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ভোটে জেতার পরে ঘোষিত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বিজয় রূপাণীকে বদল করার কোনও প্রয়োজনই নেই। মুখ্যমন্ত্রী বদল করলে বরং বার্তা যাবে, আগের সরকারের কিছু গলদ ছিল এবং মোদী তা কবুল করলেন। বরং প্রয়োজনে অন্য রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের জিতিয়ে আনা হবে দিল্লিতেই।’’
এই পরিস্থিতিতে আজ মোদী গুজরাতের সাংসদদের সঙ্গে আলাদা দেখা করেন। আগামী পরশু মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে গুজরাত যাচ্ছেন জেটলি। তার পরেই ঠিক হবে শপথের দিন। আবার এই সপ্তাহের শেষে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও যাচ্ছেন গুজরাতে। সূত্রের খবর, ভোটের পরে সে রাজ্যের দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতেই রাহুলের এই সফর। ইঙ্গিত স্পষ্ট। মোদী-রাজ্যে আর সহজ উইকেট পাচ্ছে না বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy