Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সেনার রাহুল-স্তুতি, ফডণবীসের পাল্টা

সরকারের তিন বছরের বেশি পেরিয়ে যাওয়ার পরে বিজেপি বুঝতে পারছে ধীরে ধীরে হলেও ক্রমশ শক্তি অর্জন করতে শুরু করেছে বিরোধী জোট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৫
Share: Save:

গুজরাত নির্বাচনের আগে মোদী-বিরোধী রাজনীতিকে নতুন করে উচ্চগ্রামে নিয়ে গেলেন শিবসেনা নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বিরোধী নেতা হিসেবে রাহুল গাঁধীর উঠে আসাকে প্রশংসা করার সঙ্গেই গুজরাতে বিজেপির জয় নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের। একই সঙ্গে গত কাল রাউত যে ভাবে রাহুল গাঁধী দেশকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম বলে মন্তব্য করে মোদীর সঙ্গে রাহুলের তুলনা টেনেছেন, তাতেও তুমুল জলঘোলা শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রের জোটের অন্দরে। শরিক দলের এই মনোভাবে ক্ষুব্ধ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস আজ বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, সরকারেও থাকবে, আবার বিরোধীর মতো আচরণ করবে— এ দু’টো একসঙ্গে চলে না। এনডিএ জোটে থাকবে কি না, শিবসেনার তা ভেবে দেখার সময় এসে গিয়েছে।

সরকারের তিন বছরের বেশি পেরিয়ে যাওয়ার পরে বিজেপি বুঝতে পারছে ধীরে ধীরে হলেও ক্রমশ শক্তি অর্জন করতে শুরু করেছে বিরোধী জোট। রাহুলও আগের চেয়ে অনেক পরিণত নেতৃত্ব দিচ্ছেন। খোদ শিবসেনা নেতা রাউতের কথায়, ‘‘তিন বছর আগে যে রাহুলকে পাপ্পু বলে ডাকা হত, তিনি আজ অনেক পরিণত।’’ বিরোধী জোট যখন ক্রমে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, সে সময়ে শরিক দলের বিরুদ্ধে শিবসেনা এ ভাবে মুখ খোলায় উদ্বিগ্ন বিজেপি শিবির। জোট-শরিকদের মধ্যে এই মতপার্থক্য ছায়া ফেলেছে দিল্লির থেকে মহারাষ্ট্রেও। তাই আজ পাল্টা আক্রমণে ফডণবীস জানিয়ে দিয়েছেন, উদ্ধব ঠাকরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তিনি জোট চান কি না। শরিক হয়ে সরকার-বিরোধী মন্তব্য করার মতো দ্বিচারিতা বিজেপি সহ্য করবে না।

শিবসেনার মতে, বড় শরিকের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার জন্য বিজেপিই সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী। তাদের অভিযোগ, মোদী সরকার শুরু থেকেই এনডিএ-র শরিক দলগুলিকে প্রয়োজনীয় মর্যাদা দেয়নি। উপেক্ষা করেছে। বঞ্চনা করা হয়েছে মন্ত্রিত্ব বন্টনেও। বিজেপির একাংশ মনে করছে, সেই ক্ষোভ থেকেই তলে-তলে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা শুরু করেছে শিবসেনা। এনডিএ-র শরিক হলেও এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিভা পাটিল বা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো কংগ্রেস প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছিল শিবসেনা। সূত্রের খবর কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূলের সঙ্গেও তলে-তলে যোগাযোগ রেখে চলছে উদ্ধব ঠাকরের দল। বিজেপির কথায়, আসলে জল মাপছে শিবসেনা। দলের একাংশের আশঙ্কা, ২০১৯-র আগে বিরোধী জোট যদি শক্তিশালী আকার নিতে সক্ষম হয়, সে ক্ষেত্রে শিবির পাল্টাতে দ্বিধা করবে না শিবসেনা। আর তাই এখন থেকেই বিজেপি-বিরোধিতার সুর চড়িয়ে সেই জমি তৈরি করে রাখছেন শিবসেনা নেতৃত্ব।

শিবসেনার এই কৌশল আন্দাজ করেই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার ডাক দিয়েছেন ফডণবীস। তাঁর কথায়, ‘‘একই সঙ্গে শাসক ও বিরোধী দলের ভূমিকা যে পালন করা যায় না তা শিবসেনাকে বুঝতে হবে। সিদ্ধান্তের বিরোধিতার পরিবর্তে তারা পরামর্শ দিক। সব সময় সমালোচনা মেনে নেওয়া যায় না। দলের অবস্থান কী হবে, এ নিয়ে এবার উদ্ধব ঠাকরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE