Advertisement
E-Paper

স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে মোদীকে চিঠি গগৈয়ের

রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে স্থলসীমান্ত চুক্তির আওতা থেকে অসমকে বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তাঁর বক্তব্য, ওই চুক্তির ক্ষেত্রে অসমকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই চুক্তি রূপায়নের সময় অসমকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছেন গগৈ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৪:২৭

রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে স্থলসীমান্ত চুক্তির আওতা থেকে অসমকে বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তাঁর বক্তব্য, ওই চুক্তির ক্ষেত্রে অসমকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই চুক্তি রূপায়নের সময় অসমকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছেন গগৈ।

লোকসভা ভোটের আগে থেকেই স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মতদ্বন্দ্ব চলছে। বিলটি এনেছিল কংগ্রেস। ওই সময় বিজেপি নেতারা জানিয়েছিলেন, অসমের এক ইঞ্চি জমি তাঁরা বাংলাদেশের হাতে যেতে দেবেন না। ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অসমে এসে অন্য কথা জানান। জমি হস্তান্তরে রাজ্যের মানুষের সম্মতি চেয়ে তিনি বলেছিলেন— ‘অসমের মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে বলছি, এই হস্তান্তর আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতি বলে মনে হলেও, এতে অসমের লাভ হবে। বন্ধ হবে অনুপ্রবেশ। স্থলসীমান্ত চুক্তি থেকে অসমবাসীর যাতে লাভ হয়— আমরা সেই চেষ্টা করব।’

কংগ্রেস ও বিজেপি চুক্তির পক্ষে সওয়াল করলেও আসু, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠন এর বিরুদ্ধে।

স্থলসীমান্ত চুক্তিতে জমি হস্তান্তরের যে হিসেব কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দিয়েছে, তাতে মিল না থাকায় জটিলতা বৃদ্ধি পায়। কেন্দ্র জানিয়েছিল, এই চুক্তির ফলে অসমের ২৬৮ একর জমি বাংলাদেশকে দিতে হবে। বিনিময়ে কোনও জমি অসম পাবে না। অসম বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য ছিল, এই চুক্তিতে অসমকে সামিল করলে বিধানসভা ভোটে দলের ভরাডুবি হবে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে অসমে ১৪টির মধ্যে ৭টিতে জিতে বিজেপি সেখানে জয়ের গন্ধ পেয়েছে। রাজ্যে পুর নির্বাচনেও ভাল ফল করেছে বিজেপি। ফলে আগামী বিধানসভা ভোটে রাজ্য দখল করাই দলের লক্ষ্য। সে দিকে তাকিয়েই দলের নেতারা এই চুক্তি নিয়ে আপত্তি তোলে।

কেন্দ্রের হিসেব উড়িয়ে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন ও প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে গগৈ জানান, ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত চিহ্নিতকারী রেখা নতুন করে আঁকা হলে (২০১১ সালের বিল অনুযায়ী), করিমগঞ্জ জেলার লাঠিটিলা-দুমাবড়ি সেক্টরের লাঠিটিলা এলাকায় বাংলাদেশের দখলে থাকা ৭১৪ একর বিতর্কিত জমি অসমের হাতে আসবে। বদলে বড়ইবাড়ি কালাবাড়ি এলাকায় ১৯৩.৮৫ একর জমি ও পাল্লাঠাল এলাকার ৭৪.৫৫ একর জমি পাবে বাংলাদেশ। গগৈয়ের বক্তব্য, ওই ২৬৮.৪০ একর জমি নামেই ভারতের সীমান্তভুক্ত। তা আদতে বাংলাদেশের হাতেই রয়েছে। তাই জমি বিনিময় হওয়ার পর, অসম তথা ভারত ৪৪৫.৬ একর জমি বেশি পাবে।
নতুন চুক্তি হলে আখেরে লাভবান
হবে অসমই।

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে গগৈ জানিয়েছেন— ‘কেন্দ্রের মতবদল নিয়ে আমরা অন্ধকারে। কেন এই চুক্তি থেকে অসমকে বাদ দেওয়া হচ্ছে এবং এতে কী ভাবে অসমবাসীর স্বার্থ রক্ষা করা হবে তা বোঝা যাচ্ছে না।’

কেন্দ্র জানিয়েছিল, অসমকে বাদ রেখে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরে রাজি বাংলাদেশ। কিন্তু ২ মে পড়শি দেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়র আলম ও চুক্তির অন্যতম প্রধান মধ্যস্থতাকারী তথা ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রাক্তন হাই-কমিশনার তারিক করিম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশকে সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি ভারত। অসমকে চুক্তি থেকে বাদ রাখলে জটিলতা বাড়তে পারে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী অসমে এসে জমি হস্তান্তর নিয়ে রাজ্যবাসীর সম্মতি চেয়েছিলেন। বিদেশ মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটিও তার পক্ষে মত দিয়েছিল। গগৈ তাঁর চিঠিতে এই দু’টি বিষয় নরেন্দ্র মোদীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন।

Narendra Modi BJP New Delhi Tarun Gogoi Land Boundary Agreement Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy