Advertisement
E-Paper

পরম্পরা ভেঙে দু’বার জিততে মরিয়া মণিলাল

ভোট ময়দানের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, পরম্পরা নিয়েই উদ্বেগে পাথারকান্দির কংগ্রেস প্রার্থী বিধায়ক মণিলাল গোয়ালা।কারণ, ওই আসনে এখনও পর্যন্ত পরপর দু’বার জিততে পারেননি কেউ-ই। মণিলালবাবু পাথারকান্দি থেকে থেকে তিন বার বিধায়ক হয়েছেন বটে, তবে পরপর নয়। এক বার হেরেছেন তো পরের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।

শীর্ষেন্দু শী

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০৫:৪৮

ভোট ময়দানের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, পরম্পরা নিয়েই উদ্বেগে পাথারকান্দির কংগ্রেস প্রার্থী বিধায়ক মণিলাল গোয়ালা।

কারণ, ওই আসনে এখনও পর্যন্ত পরপর দু’বার জিততে পারেননি কেউ-ই। মণিলালবাবু পাথারকান্দি থেকে থেকে তিন বার বিধায়ক হয়েছেন বটে, তবে পরপর নয়। এক বার হেরেছেন তো পরের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।

করিমগঞ্জ জেলার সব চেয়ে বেশি ভোট পাথারকান্দি আসনে। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, মোট ভোটার ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬০৪ জন। এর মধ্যে ৬৩ হাজার ১৮৮ জন মুসলমান। বাঙালি হিন্দু ভোট রয়েছে ৩৫ হাজার ৩৬৬টি। চা-জনগোষ্ঠী ২৮ হাজার ৭৩৬ জন। মণিপুরি ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি মিলিয়ে ১৫ হাজার ১৩৮ জন। ৬ হাজার ১৭৬ জন রয়েছেন উপজাতি ভোটার।

পরম্পরা থেকে স্পষ্ট, এই অঞ্চলকে কোনও রাজনৈতিক দলের ঘাঁটি বলা যায় না। বিজেপির টিকিটে সুখেন্দুশেখর দত্ত ও কার্তিকসেনা সিংহ আগে বিজয়ী হয়েছেন। দু’জনের ক্ষেত্রেই বিজেপি বাঙালি হিন্দু এবং মণিপুরি সম্প্রদায়ের ভোট পেয়েছিল। পাশাপাশি চা-বাগান অধ্যুষিত এলাকার কিছু ভোট পেতেও সক্ষম হয়েছিলেন তাঁরা। কার্তিকবাবু ২০০৬ সালে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জিতলেও পরের নির্বাচনে ছিলেন এআইইউডিএফ প্রার্থী। সেই সময় ব্যাপক সংখ্যালঘু ভোট পান। এর পরও জিততে পারেননি। কারণ
হিন্দু বাঙালি এবং চা বাগান
শ্রমিকদের ভোট সে বার মণিলাল গোয়ালার পক্ষে যায়। বিজয়ী হন মণিলালবাবু।

এ বারও ভোটের সমীকরণ বদলায়নি। যে কোনও তিন সম্প্রদায়ের ভোট যিনি পাবেন, তিনিই জয়ী হবেন। মণিলাল গোয়ালাকে অবশ্য প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ারও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। নিজে ছিলেন পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব। কিন্তু পাথারকান্দির মানুষকে রাস্তাঘাট নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। জনগণ অনেক আন্দোলন করেছেন। তিনি যেমন সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সমস্যার সমাধান করতে পারেননি, তেমনই জনতার প্রতিনিধি হয়ে আন্দোলনের শরিকও হননি। এর পরও তাঁর ভরসার জায়গা, তিনি চা বাগান জনগোষ্ঠীর মানুষ। বাগান শ্রমিকদের অধিকাংশ ভোট তাঁর পক্ষেই পড়বে বলে আশা মণিলালবাবুর। আর সেই সূত্রেই তিনি এ বার পরম্পরা ভাঙার ব্যাপারে নিশ্চিত বলে দাবি করেন।

এই আসনে জোর লড়াইয়ের ক্ষেত্র তৈরি করেছেন বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু পালও। করিমগঞ্জ শহরে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তাঁর। দীর্ঘদিন কংগ্রেসে থাকায় প্রতিপক্ষের কৌশল সম্পর্কেও তিনি অবগত। কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাবি, বাগান ভোটে শক্ত থাবা বসিয়েছে বিজেপি। ফলে তাঁদের উপর ভরসা করে মণিলালবাবুর জয়ের আশা এ বার আর পূরণ হচ্ছে না।

তবে ময়দানে শুধু মণিলাল গোয়ালা ও কৃষ্ণেন্দু পাল নন, দু’জনকেই অস্বস্তিতে রেখেছেন এআইইউডিএফ প্রার্থী দেবেন সিনহা। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ। চিকিৎসক হিসেবে যথেষ্ট খ্যাতি তাঁর। কর্মস্থল শিলচরে হলেও জন্মস্থান পাথারকান্দিতে। এখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া। তার উপর নিখিল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি মহাসভার কেন্দ্রীয় সমিতির সভাপতি তিনি।

দেবেনবাবুর যুক্তি, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সম্প্রদায়-সহ সমস্ত হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভাল ভোট তিনি পাবেন। সঙ্গে যোগ হবে এআইইউডিএফ-র মুসলমান ভোট। ফলে মণিলাল গোয়ালা বা কৃষ্ণেন্দু পালের পক্ষে তাঁর জয় ঠেকানো সম্ভব নয়।

সব প্রার্থীর জয়ের দাবিতে পাথারকান্দি বিধানসভা আসনে লড়াই বেশ জমে উঠেছে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসলে পরম্পরা ধরে রাখা না ভাঙা হবে এ বার।

state assembly election 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy