মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থাই করেছিলেন সোনম রঘুবংশী। নিজেই কেটেছিলেন যাওয়ার টিকিট। সেখানে কোথায় থাকবেন, সেই ব্যবস্থাও করেছিলেন। কিন্তু ফেরার কোনও টিকিট কাটেননি সোনম। এমনটাই দাবি করলেন নিহত রাজা রঘুবংশীর মা উমা রঘুবংশী। তাঁর আরও দাবি, মেঘালয়ের কোথায় কোথায় যাবেন, তা নিয়ে পরিবারের কাউকে কিছু জানাননি সোনম। তা হলে কি স্বামী রাজাকে খুনের পরিকল্পনা মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার আগেই করেছিলেন তরুণী? সেই বিষয়টিই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সোনমের শাশুড়ি উমার আরও দাবি, তাঁর পুত্র প্রায় ১০ লক্ষ টাকার গয়না পরে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন। তা করতে বাধ্য করেছিলেন পুত্রবধূ সোনমই।
সোনমের শাশুড়ি বলেন, ‘‘মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছিলেন সোনমই। হয়তো ওরা শিলঙেও যেত। আমার ছেলে ওই এলাকার কিছুই চিনত না। ওর মা আমায় বলেন, ওঁরা নাকি গত বছর শিলঙে গিয়েছিলেন।’’ তাঁর দাবি, মেঘালয়ের কোথায় কোথায় সোনমদের যাওয়ার কথা ছিল, তা তাঁরা জানতেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনম এবং তাঁর স্বামী মধুচন্দ্রিমায় অনেক গয়না পরে গিয়েছিলেন। রবিবার গভীর রাতে ধরা পড়ার আগে সোনম উত্তরপ্রদেশের ধাবার মালিককে জানিয়েছিলেন, তাঁর সব গয়না চুরি হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রাজার মা জানিয়েছেন, রাজা মধুচন্দ্রিমায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকার গয়না পরে গিয়েছিলেন। তাঁর গলায় ছিল চেন, হাতে ব্রেসলেট, আঙুলে হিরের আংটি। যখন তাঁকে তাঁর মা এত গয়না পরার কারণ জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি জানিয়েছিলেন সোনম এ সব পরতে বলেছে তাঁকে। তিনি জানিয়েছেন, সোনম যদি সত্যি দোষী সাব্যস্ত হয়, তা হলে তাঁর ফাঁসি হওয়া উচিত। সিবিআই তদন্তের দাবিও করেছেন তিনি। তবে তিনি বলেন, ‘‘সোনম যদি কিছু না করে থাকে, তা হলে তাঁকে কেন অভিযুক্ত করা হবে? সোনমের স্বভাব খুব ভাল ছিল। আমায় জড়িয়ে ধরত।’’
গত ১১ মে রাজার সঙ্গে বিয়ে হয় সোনমের। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন দু’জন। ২৩ মে সেখান থেকেই তাঁরা নিখোঁজ হয়ে যান। ১০ দিন পরে রিয়ার আরলিয়াংয়ের এক খাদে রাজার দেহ উদ্ধার হয়। রাজার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যে হাতে পেয়েছে মেঘালয় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, তাঁর মাথার পিছনের দিকে ঘাড়ের উপরে একটি গভীর ক্ষত মিলেছে। কপালের উপরের দিকে আর একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আভাস, ধারালো কিছু দিয়ে মাথার দু’দিকে আঘাত করা হয়েছিল রাজাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজার শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে ‘সবচেয়ে মারাত্মক’ দুটো আঘাত ছিল মাথার দু’দিকে। রবিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের এক ধাবা থেকে গ্রেফতার হন সোনম। তিনি ধাবার মালিকের কাছে দাবি করেন, তাঁর গয়নাগাটি চুরি হয়েছে। তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। কী ভাবে তিনি সেখানে এসেছেন, জানেন না।