সোনম রঘুবংশী ২৩ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন। অবশেষে রবিবার রাত ১টা নাগাদ উত্তরপ্রদেশের এক ধাবায় প্রথম তাঁর দেখা মেলে। মালিকের কাছে গিয়ে সাহায্য চেয়েছিলেন। তার পরেই শিলংকাণ্ডের জাল গোটাতে সমর্থ হয় পুলিশ। ধাবার মালিক সাহিল যাদব সংবাদমাধ্যমের কাছে এ বার জানালেন, তাঁর কাছে সাহায্য চেয়ে কী বলেছিলেন সোনম। সোনমের সেই বক্তব্য এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
রবিবার রাত ১টা নাগাদ উত্তরপ্রদেশের ওই ধাবায় যান সোনম। ধাবার মালিক সাহিল ইন্ডিয়া টুডে টিভির কাছে দাবি করেছেন, সোনম তাঁকে জানিয়েছেন, মেঘালয়ে তাঁর গয়নাগাটি চুরি করা হয়েছে। তার পরেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। কী ভাবে উত্তরপ্রদেশের ওই ধাবায় এসে পৌঁছেছেন তিনি, সে বিষয়ে কিছুই জানেন না। এর পরেই সাহিল পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ এসে সোনমকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
ঠিক কী ঘটেছিল রবিবার রাতে? সাহিল সংবাদমাধ্যমকে জানান, রাত ১টা নাগাদ সোনম তাঁর কাছে এসে তাঁর ফোন চেয়েছিলেন। তার পরে ফোনে ভাই গোবিন্দকে ফোন করেছিলেন সোনম। সাহিলের দাবি, ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময়ে ভেঙে পড়েন তিনি। সাহিল এ-ও জানিয়েছেন, ধাবায় প্রবেশ করে বেশ কয়েক জন ক্রেতার থেকেও ফোন চেয়েছিলেন সোনম। তাঁরা যখন ফোন দিতে রাজি হননি, তখন তরুণী তাঁর কাছে ফোন চান। সোনম তাঁকে জানান, তাঁর সঙ্গে কেউ নেই। তাঁকে ওই ধাবায় ছেড়ে দিয়ে গিয়েছে কয়েক জন। তবে কে বা কারা এই কাজ করেছে, তা নিয়ে বিশদে সোনম কিছু জানাননি বলেই দাবি করেন ধাবার মালিক সাহিল। সোনম প্রায় দু’ঘণ্টায় তাঁর ধাবায় কাটিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন সাহিল। সে সময় সোনমের ভাই তাঁর মোবাইলে ফোন করেন। সাহিলকে দ্রুত ফোন করে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি। সাহিলের কথায়, ‘‘সোনমের ভাই আমায় ফোন করে পুলিশকে জানাতে বলে যে, এই মেয়েটি সেই শিলংকাণ্ডে জড়িত।’’ তাঁর কথা শুনেই থানায় ফোন করেন সাহিল। তার পরেই পুলিশ এসে সোনমকে নিজের হেফাজতে নেয়।
শিলঙে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন রাজা রঘুবংশী এবং তাঁর স্ত্রী সোনম। ১১ দিন পর রাজার দেহ মিললেও সোনম নিখোঁজ ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে রবিবার রাতে হেফাজতে নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। মেঘালয় পুলিশের দাবি, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে স্বামীকে মধুচন্দ্রিমায় নিয়ে গিয়ে খুন করেন সোনম। সঙ্গে ছিলেন প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা। অভিযোগ, স্বামীকে খুনের জন্য তিন জন ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন সোনম। সোনমের বাবা দেবী সিংহের অবশ্য দাবি, তাঁর মেয়ে ‘নিরপরাধ’। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওকে বিশ্বাস করি। ও এ রকম কখনওই করতে পারে না। মেঘালয় সরকার প্রথম থেকে মিথ্যা বলছে।’’