দিল্লির লালকেল্লার কাছে যে গাড়িতে বিস্ফোরণের জেরে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, এ বার সেই গাড়িচালকের মাকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ডেকে পাঠাল পুলিশ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিস্ফোরণের ঠিক আগে গাড়ির বর্তমান ‘মালিক’ তথা পুলওয়ামার চিকিৎসক উমর মহম্মদ গাড়িতে ছিলেন। সম্ভবত গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তিনিই। সেই তত্ত্বে সিলমোহর দিতে এ বার পুলওয়ামায় উমরের মাকে ডেকে পাঠালেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণস্থল থেকে পাওয়া দেহাংশ শনাক্ত করার জন্য প্রথমে উমরের মায়ের ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। তার পর সেই ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে নিহতের সঙ্গে। পুলিশের এক কর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, ‘‘বিস্ফোরণস্থলে পাওয়া দেহাংশের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য আমরা সন্দেহভাজনের মাকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য নিয়ে এসেছি। এ ছাড়া, বিস্ফোরণে জড়িত গাড়িটি বিক্রি ও কেনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উমর ছিলেন পুলওয়ামার কোয়েল গ্রামের বাসিন্দা। আপাতত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য উমরের দুই ভাই মিলে তাঁদের মাকে পুলওয়ামার একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। পাশাপাশি, উমরদের কোয়েল গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা গুলাম নবি ভাটকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে ফরিদাবাদেও। দিনদুয়েক আগে আল ফালাহ নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক চিকিৎসকের ঘর থেকে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল, সেখানে ছাউনি করে থাকতে শুরু করেছে পুলিশের একটি দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মী ও অধ্যাপককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধৌজ থানা এলাকাতেও চলছে চিরুনি তল্লাশি।
সোমবার রাতে দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের পার্কিং এলাকার কাছে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই আই ২০ গাড়িটির মালিক মহম্মদ সলমনকে আটক করে জানা যায়, গাড়িটি আগেই পুলওয়ামার এক বাসিন্দাকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে নথিপত্রে তখনও নামবদল হয়নি। পরে জানা যায়, গাড়িটির এখনকার মালিক চিকিৎসক উমর মহম্মদই বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে লালকেল্লার কাছে একটি পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে ছিল গাড়িটি। গাড়িটিতে নীল-কালো টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি বসেছিলেন। দাবি, ওই ব্যক্তিই ছিলেন চিকিৎসক উমর। ফরিদাবাদকাণ্ডে গ্রেফতার দুই চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিল ও আদিল রাথারের সঙ্গেও তাঁর যোগ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবারের ওই বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা কী উদ্দেশ্যে ওই ঘটনা ঘটালেন, তা জানতে তদন্ত চলছে।