ভেঙে পড়েছেন আখলাকের বাড়ির লোকজন। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।
ভয়টা এখনও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মহম্মদ আখলাকের পরিবার এবং তাঁর প্রতিবেশীরা আর তাই থাকতে চাইছেন না বিসারা গ্রামে। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা নয়ডার বিজেপি সাংসদ মহেশ শর্মা তাঁদের আশ্বস্ত করে আজ বলেছেন, আখলাকের মৃত্যু একটি দুর্ঘটনা। এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হিংসার কোনও যোগ নেই। কেন্দ্রও আজ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে এই ঘটনার একটি সবিস্তার রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। বলেছে, ভবিষ্যতে এর যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।
মহেশের মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। মহেশকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছে আপ। ২০১৭-র উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ করেই বিজেপি রাজ্যে হিংসা ছড়াতে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী আজম খান। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। সাংসদ আদিত্যনাথ বলেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ চলছে। অপরাধী আর মাফিয়াদের পাশে দাঁড়াচ্ছে খোদ সরকারই।’’ একই ভাবে সরকারকে দুষেছে বহুজন সমাজবাদী পার্টির নেত্রী মায়াবতীও।
সোমবার রাতে দাদরি পরগনার বিসারা গ্রামে ৫০ বছরের মহম্মদ আখলাককে পাথর দিয়ে পিটিয়ে খুন করে জনতা। তিনি গোমাংস খেয়েছিলেন বলে গ্রামে গুজব ছড়িয়েছিল। আখলাকের ছোট ছেলে দানিশকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই গ্রামের মন্দিরে একটি ঘোষণা থেকেই সে দিন রাতে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মতে, এর পিছনে রয়েছেন দুই যুবক। আখলাকের বাড়িতে গোহত্যা করা হয়েছে, এই ঘোষণা করতে তারাই মন্দিরের পুরোহিতকে বাধ্য করে। তবে বর্তমানে গ্রামের অবস্থা স্থিতিশীল বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। পুলিশের আশ্বাসে মোটেই ভরসা পাচ্ছেন না আখলাকের পরিবার। আখলাকের বড় ছেলে, সরতাজ বলেছেন, ‘‘আমরা এখান থেকে চলে যাব। কে বলতে পারে, এই ঘটনা আবার ঘটবে না?’’ আজ আখলাকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক রাজেশ কুমার। এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন আখলাকের স্ত্রী।
কী ভাবে ঘটল ঘটনাটা তা বুঝতে পারছেন না সরতাজ।
চেন্নাইয়ে ভারতীয় বায়ুসেনায় কর্মরত তিনি। ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগেই বাবার সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সরতাজ বলেছেন, ‘‘টাইফয়েড হয়েছিল বাবার। রক্তচাপ ছিল কম। আর তো সব ঠিকই ছিল।’’ কিন্তু তার কিছু ক্ষণ পরেই বদলে যায় চিত্রটা।
উত্তে়জিত জনতার তাণ্ডবে মৃত্যু হয় আখলাকের।
পড়ুন: নয়ডার ঘটনায় অখিলেশ সরকারকে কড়া সতর্কবার্তা কেন্দ্রের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy