Advertisement
E-Paper

‘বেঙ্গালুরুতে কাজ না পেলেই ভাল হত!’ অন্ধ্রের বাস দুর্ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার কন্যার মৃত্যুতে দিশাহারা বাবা-মা

দীপাবলি উপলক্ষে ছুটি পেয়ে বাড়িতে এসেছিলেন অনুষা। পরিবারের সঙ্গে উৎসব পালনের পর বৃহস্পতিবার রাতে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৩১
(বাঁ দিকে) অগ্নিদগ্ধ সেই বাস। এই বাসেই ছিলেন অনুষা। ঝলসে মৃত্যু হয়েছে তাঁর (ডান দিকে) ।

(বাঁ দিকে) অগ্নিদগ্ধ সেই বাস। এই বাসেই ছিলেন অনুষা। ঝলসে মৃত্যু হয়েছে তাঁর (ডান দিকে) । ছবি: সংগৃহীত।

মাস দুয়েক আগেই হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুর একটি নামী আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় বদলি হয়েছিলেন বছর তেইশের অনুষা। হায়দরাবাদে ওই সংস্থাতেই কাজ করতেন। কিন্তু গত অগস্টে বেঙ্গালুরুতে বদলি করা হয় তাঁকে। দীপাবলি উপলক্ষে ছুটি পেয়ে বাড়িতে এসছিলেন অনুষা। পরিবারের সঙ্গে উৎসব পালনের পর বৃহস্পতিবার রাতে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। বাড়িতে এলে হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরু বাসেই যেতেন তিনি। বৃহস্পতিবারেও বাসে চেপেছিলেন, কিন্তু সেটাই যে তাঁর শেষযাত্রা হবে, এখনও ভাবতে পারছেন না অনুষার বাবা-মা।

কন্যাকে বাসে তুলে দিতে এসেছিলেন প্রৌঢ় দম্পতি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপার বাস। সব ঠিকমতো গুছিয়ে নিয়েছেন কি না বাসে ওঠার আগে কন্যাকে ভাল করে দেখে নিতে বলেন। তার পর রাতে বাস ছাড়ে। কন্যাকে বিদায় জানিয়ে বাড়ি ফেরেন দম্পতি। শুক্রবার সকালে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পান কুর্নুলে একটি বাস দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে। এক অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে দম্পতির। তাঁদের কন্যাও তো রাতের বাসে গিয়েছেন! টিভি-তে চোখ রাখতেই আঁতকে ওঠেন দম্পতি। এটা তো সেই বাসই! মাথায় যেন বজ্রপাত হল। ছুটে গিয়েছিলেন বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকেই জানতে পারেন, বৃহস্পতিবার রাতে যে স্লিপার বাসটি বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে রওনা হয়েছিল, সেটিই দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে। তত ক্ষণে এক এক করে মৃত্যুর খবরও আসতে শুরু করেছিল।

তরুণীর বাবা বলেন, ‘‘কেন যে ও বেঙ্গালুরুর চাকরি নিতে গেল? আরও কয়েকটা দিন থেকে যেতে বলেছিলাম মেয়েকে। কিন্তু শুনল না। বলল কাজ আছে যেতেই হবে। একেবারেই ছেড়ে চলে গেল আমাদের।’’ এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।

পাঁচ মাস আগেই বেঙ্গালুরুতে চাকরি পেয়েছিলেন মেঘনাধ নামে আর এক তরুণ। তিনিও ছুটিতে এসেছিলেন হায়দরাবাদের বাড়িতে। পুত্রকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ বাবা-মা। আবার এই দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা গুনা সাই বলেন, ‘‘সকলে ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। নাকে হঠাৎ পোড়া পোড়া গন্ধ ভেসে এল। তার পরই দেখলাম বাসের বাইরে আগুনের হলকা। শুধু মনে আছে, জানলার কাচ ভেঙে নীচে লাফিয়ে পড়েছিলাম।’’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে বেঙ্গালুরুগামী বাসে আগুন ধরে যায়। সেই দুর্ঘটনায় জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। ইতিমধ্যেই মৃতদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবারের মধ্য তা শেষ করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

Andhra Pradesh Bus Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy