Advertisement
E-Paper

‘বাবাকে সত্যিকারের গুলি মেরেছিল, আমি ঘৃণার গুলিতে বিদ্ধ হতে প্রস্তুত’

‘আমার বাবাকে পাকিস্তান মারেনি, মেরেছে বন্দুকের গুলি’— শহিদ-কন্যা গুরমেহের কউরের এই মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক হইচই হয়। বেশির ভাগ লোকজন তাঁকে এই মন্তব্যের জন্য ‘দেশদ্রোহী’ তকমাও দিয়ে ফেলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ১৫:৩৪

‘আমার বাবাকে পাকিস্তান মারেনি, মেরেছে বন্দুকের গুলি’— শহিদ-কন্যা গুরমেহের কউরের এই মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক হইচই হয়। বেশির ভাগ লোকজন তাঁকে এই মন্তব্যের জন্য ‘দেশদ্রোহী’ তকমাও দিয়ে ফেলেন। এমনকী, তাঁকে ধর্ষণেরও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, এক জন সেনার মেয়ে হয়ে তিনি কী ভাবে এই মন্তব্য করলেন? এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু, অভিনেতা রণদীপ হুডা থেকে শুরু করে ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সহবাগের মতো ব্যক্তিত্বরাও ছিছিক্কার করেন। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাত্কার দেন গুরমেহর।

এই ঘটনার পরে অনেকগুলি দিন কেটে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, সেই ঘটনারই স্মৃতি উস্কে তিনি বলেন, “আমার বাবা বন্দুকের আসল গুলিতে মারা গিয়েছেন। কিন্তু, আমি ঘৃণার গুলি নিতে প্রস্তুত।” তাঁকে যে ভাবে ‘বলির পাঁঠা’ বানিয়ে রাজনীতির খেলা চলেছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে গুরমেহের বলেন, “নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে আপনারা আমাকে ব্যবহার করেছেন। আমার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন। কিন্তু দমাতে পারেননি। এমনকী, ভয় পেয়ে পালিয়েও যাইনি। তবে আমার মনের জানলা কিন্তু খুলে দিয়েছেন আপনারাই।”

আরও পড়ুন: সিংহ শাবক বিক্রি হচ্ছে! অভিযোগ গেল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে

যখন দু’বছর বয়স, বাবাকে হারিয়েছিলেন গুরমেহের। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে শহিদ হন তিনি। ছোটবেলা থেকেই মা এবং বোনের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন তিনি। অনেকটা মহিলা পরিবেষ্টিত হয়েই। বাবার দেহ বাড়িতে কফিনে করে আসার পরই মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, বাবা কেন ঘুমিয়ে রয়েছে? একটা ছোট্ট মেয়ের এর থেকে বেশি বোঝার ক্ষমতা ছিল না। সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য মাকে তাঁর কাছে মিথ্যে বলতে হয়েছিল, জানান গুরমেহের। শহিদ শব্দটা এখন একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। অনেকেই হয়তো বলবেন, এক জন সেনা হারানোর পর কী ভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখা সম্ভব! গুরমেহের মনে করেন, এই ‘আবেগ’কে সামনে রেখেই জাতীয়তাবাদের ধোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তাঁর সময় কেটেছে, তাতে গুরমেহের চান না কোনও সেনা শহিদ হোক, আর জাতীয়তাবাদের নাম দিয়ে সেটার ফায়দা তুলুক কেউ। শহিদের দেহকে সামনে রেখে জাতীয়তাবাদের জিগির তোলা হোক, এটা চান না গুরমেহের।

প্রশ্ন তোলেন, তাঁর যে ভিডিও ও মন্তব্য নিয়ে এত হইচই, এত ছিছিক্কার, সেটা এক বছর আগেই নজরে এসেছিল অনেকের। কিন্তু সে সময় তাঁকে কেউ দেশদ্রোহী বলেননি। সরাসরি না বললেও বিজেপির ছাত্র সংসদ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদকে আক্রমণ করেছেন তিনি। এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই তাঁকে দেশদ্রোহী বানিয়ে দেওয়া হল? প্রশ্ন গুরমেহেরের। পাশাপাশি তিনি এটাও জানান, আফজল গুরু নিয়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা উমর খালিদের বক্তব্যকেও সমর্থন করেন না তিনি।

Gurmehar Kaur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy