জওহরলাল নেহরুর কারণে এখনও দেশকে কাশ্মীর সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে বলে ফের সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ নেহরুর মৃত্যুদিনেও তাঁকে লক্ষ্য করে মোদী আক্রমণ শানানোয় সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে আজ মোদী যখন চিনের নাম করেও স্বদেশিয়ানায় জোর দেওয়ার কথা বলেছেন, তখন উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার জানিয়েছে, তাদের রাজ্যে জুতো নির্মাণ সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে সাতটি চিনা সংস্থা।
আজ ছিল মোদীর গুজরাত সফরের দ্বিতীয় দিন। গান্ধীনগরে আজ ফের ‘অপারেশন সিঁদুর’ প্রসঙ্গ টেনে পরোক্ষে নেহরুর কাশ্মীর নীতির সমালোচনায় সরব হন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘১৯৪৭ সালে প্রথম যখন জঙ্গিরা কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছিল, তখনই কড়া হাতে ওই সমস্যা সমাধান করা উচিত ছিল। স্বাধীনতার ঘোষণা হওয়ার পরেই কাশ্মীরের একটি অংশ মুজাহিদিনেরা দখল করে নেয়। সে সময়ে পটেল চেয়েছিলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল না করা পর্যন্ত ভারতীয় সেনা অভিযান চালিয়ে যাক। কিন্তু তাঁর কথা অগ্রাহ্য করেন তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্ব।’’
নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া সিন্ধু জল চুক্তিরও সমালোচনা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘সিন্ধু জল চুক্তিতে বলা আছে, জম্মু-কাশ্মীরের নদীর উপরে যে বাঁধ রয়েছে তা পরিষ্কার করা যাবে না। ফলে বাঁধগুলির জল ধারণক্ষমতা এখন ২-৩ শতাংশে এসে পৌঁছেছে।’’ এরপরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা কেবল ওই জল চুক্তি স্থগিত রেখেছি, তাতেই পাকিস্তান ভয় পেয়ে গিয়েছে।’’
নেহরুর মৃত্যুদিনে তাঁর সমালোচনা করে আসল সমস্যা থেকে মোদী নজর ঘোরাতে চাইছেন বলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, কেন পহেলগামের জঙ্গিদের এত দিনেও খোঁজ পাওয়া গেল না। চিন ও পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে মোদীর নীরবতা এবং পাকিস্তানকে গোটা বিশ্বে একলা করে দেওয়ার প্রশ্নে নয়াদিল্লি কেন ব্যর্থ হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
গুজরাতের মাটি থেকে এ দিন ফের স্বদেশী পণ্য ব্যবহারের উপরে জোর দেন মোদী। আজ চিনের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘গণেশের ছোট প্রতিমাও এখন বিদেশ থেকে আসছে।’’ কিন্তু উত্তরপ্রদেশ সরকার সমাজমাধ্যমে জানিয়েছে, কানপুর ও আগরার একাধিক জুতো প্রস্তুতকারক সংস্থায় বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনের সাতটি সংস্থা। কংগ্রেসের কটাক্ষ, ‘‘এটা কি বিজেপি সরকারের স্বদেশিয়ানার প্রশ্নে দ্বিচারিতা নয়?’’
প্রসঙ্গত, মোদীর গতকালের ‘আমার গুলি তো আছেই’ বক্তৃতাকে ‘উসকানি’ বলে নিন্দা করেছে পাকিস্তান। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, পরমাণু শক্তিধরদেশের প্রধানের এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য মেনে নেওয়া য়ায় না। পাকিস্তান শান্তি চায় বলেও তাদের দাবি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)