Advertisement
E-Paper

তেলতুম্বের গ্রেফতারিতে মুখ পুড়ল সরকারের 

সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ থাকায় আদালতে তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয় ‘গোয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট’-এর এই অধ্যাপককে। 

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৪
আদালতে তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয় দলিত শিক্ষাবিদ আনন্দ তেলতুম্বেকে। ছবি: পিটিআই।

আদালতে তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয় দলিত শিক্ষাবিদ আনন্দ তেলতুম্বেকে। ছবি: পিটিআই।

সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত দলিত শিক্ষাবিদ আনন্দ তেলতুম্বেকে গ্রেফতার করে মুখ পুড়ল মহারাষ্ট্র তথা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের। কেরল থেকে ফেরার সময়ে আজ রাত তিনটে নাগাদ মুম্বই বিমানবন্দর থেকে তেলতুম্বেকে গ্রেফতার করে পুণে পুলিশ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ থাকায় আদালতে তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয় ‘গোয়া ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট’-এর এই অধ্যাপককে।

পুণের আদালত সাফ জানিয়েছে, তেলতুম্বের গ্রেফতারি বেআইনি। কারণ, আগাম জামিন চাওয়ার জন্য আনন্দকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ওই সময়সীমা অর্থাৎ ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না তাঁকে।

গত কাল তেলতুম্বের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে পুণের আদালত। সেই প্রসঙ্গ টেনে সরকারি আইনজীবী উজ্জ্বলা পওয়ার যুক্তি দেন, যেহেতু নিম্ন আদালতে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে, তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এ ক্ষেত্রে খাটবে না। যদিও এই যুক্তি ধোপে টেঁকেনি। আজ দুপুর ৩টে নাগাদ দায়রা আদালতে তোলা হয় ওই অধ্যাপককে। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

ভীমা কোরেগাঁও হিংসায় তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তেলতুম্বে। সেই আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে পুণের আদালতে যান তিনি। কিন্তু গত কাল পুণের দায়রা আদালতও তাঁর আবেদন খারিজ করে জানিয়েছে, অভিযুক্তের যে মাওবাদী যোগ রয়েছে তা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়েছে।

আজ তেলতুম্বের গ্রেফতারিতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে নানা শিবিরে। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহের মতে, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে পুণে পুলিশ আনন্দ তেলতুম্বেকে গ্রেফতার করেছে। এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশের অবমাননা করেছে পুলিশ।’’ রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী প্রকাশ অম্বেদকরের বক্তব্য, ‘‘তেলতুম্বেকে সুরক্ষা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেও কী ভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হল? প্রত্যেক অভিযুক্তেরই নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।’’ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষের কথায়, ‘‘সরকারের বেআইনি আগ্রাসন যে দিনে দিনে আরও খারাপ পথে যাচ্ছে তার প্রমাণ এই ঘটনা।’’ এর বিরুদ্ধে আজ দিল্লির প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ডাকে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠন। হাজির ছিলেন গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণী। মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেছেন, ‘‘তেলতুম্বের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেছে পুণের দায়রা আদালত। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যেতেন তিনি। সেই বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনার জন্যই কেরল থেকে এসেছিলেন। তখনই বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হল তাঁকে।’’

২০১৭ সালে ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিত বিজয় দিবস অনুষ্ঠানের পরে মহারাষ্ট্রে যে হিংসা ছড়িয়েছিল, তাতে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক এলগার পরিষদের মদত ছিল বলে অভিযোগ। এই অনুষ্ঠান থেকেই উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের দাবি, এই অশান্তির পিছনে ছিলেন সুধা

ভরদ্বাজ, ভারাভারা রাও, আনন্দ তেলতুম্বের মতো সমাজকর্মীরা। তদন্তে নেমে মাওবাদীদের একটি চিঠি উদ্ধারের কথা জানায় পুলিশ। যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ছক ছিল বলে অভিযোগ। চিঠিতে ভারাভারা রাওয়ের নাম থাকায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। গত বছর এই মামলায় ব্যাপক তল্লাশি ও ধরপাকড় চালায় পুলিশ। বর্তমানে ভারাভারা ছাড়াও পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন সুধা ভরদ্বাজ, অরুণ ফেরেরা ও ভার্নন গঞ্জালভেস।

Narendra Modi Anand Teltumbde আনন্দ তেলতুম্বে
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy