নরেন্দ্র মোদীর ভোটের কথা রাখতেই মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের ঋণ মাফ করেছে যোগী সরকার। কিন্তু গত কাল এই ঘোষণার পর থেকেই অস্বস্তি বেড়েছে খোদ নরেন্দ্র মোদীরই।
এতটাই যে, ছোট ছোট বিষয় নিয়ে যিনি ঢাক পিটিয়ে কৃতিত্ব নেন, সেই মোদী কৃষকদের জন্য ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ মাফ নিয়ে টুঁ শব্দ করেননি। তাঁর সেনাপতি অমিত শাহ গত কাল রাতেই টুইটে জয়ধ্বনি করলেও মোদী চুপ। অনেকেই মনে করছেন, এর পিছনে রাজনীতি যেমন তেমনি অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে।
রাহুল গাঁধী আজ সকালেই টুইট করে মোদীর উপর চাপ বাড়িয়ে বলেছেন, কৃষকদের আংশিক সুরাহা হলেও ঋণ মাফের সিদ্ধান্ত সঠিক দিশায় পদক্ষেপ। বাধ্য হয়ে এটা করা হয়েছে ঠিকই, তবে আর রাজনীতি না করে গোটা দেশেই কৃষকদের ঋণ মাফ করা প্রয়োজন। কংগ্রেস আজ সকালেই জানিয়ে দিয়েছে, তাদের হাতে থাকা পঞ্জাবেও এ বারে ঋণ মাফ হবে। আর সেটা হবে উত্তরপ্রদেশের থেকে ঢের ভাল ভাবে। মোদীর দ্বিতীয় অস্বস্তি, এত দিন খয়রাতি-নীতির বিরোধিতা করেও যে কোনও মূল্যে ভোটে জিততে গিয়ে তাঁকেও সেই পথে হাঁটতে হল। আর করদাতাদের টাকায় কৃষকদের ঋণ মাফ করার অর্থনীতিতে সওয়ার হয়ে ব্যাঙ্কের আশঙ্কার আঁচও তাঁকে সামলাতে হবে।
এখনও পর্যন্ত যোগী সরকার খোলসা করেনি যে, ঋণপত্র বা বন্ডের মাধ্যমে কী ভাবে টাকা তোলা হবে। গত বছর বাজেট পেশের সময় অখিলেশ সরকারের লক্ষ্য ছিল রাজ্যের মোট উৎপাদনের ৪ শতাংশের আশপাশের মধ্যে রাজকোষ ঘাটতিকে বেঁধে রাখা। ভোট-বছরে শেষ বেলার খয়রাতিতে এমনিতেই তা পূরণ করা নিয়ে সংশয় ছিল। তার উপর কৃষিঋণ মকুবের পরে ঘাটতি আরও লাগামছাড়া হওয়ার আশঙ্কা।
মহারাষ্ট্রে কৃষিঋণ মাফের সময়ই স্টেট ব্যাঙ্কের কর্ণধার অরুন্ধতী ভট্টাচার্য বলেছিলেন যে, এর ফলে কৃষকদের ঋণ শোধের প্রবণতা কমে। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে সরকার ধার মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেয় ঠিকই। কিন্তু নষ্ট হয়ে যায় ঋণ শোধের অভ্যেস। অনেক ক্ষেত্রে নতুন করে ধার নিয়ে ফের এক বার ভোটের মুখে তা মকুব হবে বলে আশা শুরু করেন চাষিরা। তার উপর যে বন্ড ছেড়ে সরকার টাকা তোলার কথা ভাবছে, তা-ও যদি ব্যাঙ্কগুলিকেই কিনতে হয়, তবে অবস্থা আরও তথৈবচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy