Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কথায় কথায় কাছের মানুষ

ইউপিএ-আমলে কত মিলত? হাজার টাকা। মোদীজি কত কথা দিয়েছিলেন? উত্তর, দেড় হাজার। বাদামের পর এ বার কাপাসের খোঁজখবর। মঞ্চ থেকে প্রশ্ন আসছে। জবাব দিচ্ছে জনতা।

প্রেমাংশু চৌধুরী
আমরেলি (গুজরাত) শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৪
Share: Save:

বাদামের দাম কত মেলে?

প্রশ্নকর্তা চুপ। কয়েক হাজার জনতা গর্জে উঠল, মোটে ৬০০ টাকা।

ইউপিএ-আমলে কত মিলত? হাজার টাকা। মোদীজি কত কথা দিয়েছিলেন? উত্তর, দেড় হাজার।

বাদামের পর এ বার কাপাসের খোঁজখবর। মঞ্চ থেকে প্রশ্ন আসছে। জবাব দিচ্ছে জনতা।

সৌরাষ্ট্রের গ্রামের মাঠে মানুষের হালচাল জানছেন রাহুল গাঁধী।

ঠিক যেমনটা আগে নরেন্দ্র মোদী করতেন। প্রশ্ন ছুড়ে চুপ থেকে জনতার জবাবের অপেক্ষা করা।

এ বার গুজরাতের ভোটে ‘ভূমিপুত্র’ অবতারে মোদীর মুখে শুধুই গুজরাতি। রাহুল সেখানে বিজেপির ভাষায় ‘বাইরের লোক’। কিন্তু রাহুল ঢুকছেন। গুজরাতের এ মাথা থেকে ও মাথা। প্রচারের বাসে চেপে পৌঁছে যাচ্ছেন আমরেলি, বোতাড, ভাবনগর— সৌরাষ্ট্রের পাতিদার অধ্যুষিত একের পর এক জেলায়। বিরাট জনসভা নয়, রাস্তার ধারে ছোট সভা। প্রশ্ন করে করে মানুষের ক্ষোভ উস্কে দেওয়া। হয়ে ওঠা কাছের মানুষ।

যেমন, নোট বাতিলের পরে লাইনে দাঁড়াতে হয়েছিল? ওখানে মোদীজির বন্ধু, স্যুট-বুট পরা শিল্পপতিদের কাউকে দেখলেন না কি? বিএমডব্লিউ-মার্সিডিজ চেপে কেউ এসেছিলেন? নিশানায় রতন টাটা, গৌতম আদানি, জয় শাহরা।

প্রশ্নই যেন অস্ত্র। দিনের শুরুতেও তাই টুইটে প্রশ্ন ছোড়েন, সরকারি প্রচারের খরচের চোটে গুজরাতের দেনার বহর বাড়ছে কেন? মঞ্চ থেকেও মনে করিয়ে দেন— মোদীজি আর প্রশ্ন শোনেন না। জবাবও দেন না। শুধু নিজের ‘মন কি বাত’।

গ্রামের লোক রাফাল যুদ্ধবিমানের দরদামে দুর্নীতির গন্ধ বোঝে না। রাহুল চেষ্টা করেন বটে, সাড়া মেলে না। তবে এই সব মানুষেরা বাদাম-কাপাসের হিসেব বোঝে। জয় শাহ-আদানিকে খোঁচা চেটেপুটে খায়। নর্মদার জল গ্রামে পৌঁছেছে কিনা, খোঁজ নিলে রেগে নালিশ করে। আর ক্ষমতায় এসে দশ দিনের মধ্যে ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি পেলে? রাহুল জানেন। তাই প্রতিশ্রুতিটা দিয়েই যান।

এলাকাটা পাতিদার অধ্যুষিত। রাহুল মঞ্চে উঠতেই তাই হার্দিক পটেলের ছেলেপিলেরা তাঁর মাথায় সাদা টুপি পরিয়ে দেয়। এক দিকে গুজরাতিতে লেখা, জয় পাতিদার। আর এক দিকে, জয় সর্দার। হার্দিকের ছবি ছাপানো কাপড় গলায় ঝোলাতেও আপত্তি করেন না রাহুল। পাতিদারের সঙ্গে ঠাকুর, দলিত মেলান। বলেন, গুজরাত এমন এক রাজ্য— সব সম্প্রদায়ই এখানে আন্দোলন করছে। ব্যতিক্রম মোদীজির ৫-১০ জন ‘মিত্র’। স্লোগান তোলেন, জয় সর্দার। জয় ভীম। মানুষ গলা মেলায়। ‘কাছের মানুষ’ হয়ে ওঠেন রাহুল।

রাহুলের বাস চলে যাওয়ার পরে মহিলা মহলের আড্ডায় কান পাতলে শোনা যায়, জোর বিতর্ক চলছে! মুখের আদলটা ঠিক কার মতো? রাজীব না সনিয়া? পিতাজেও দেখাই ছে! না! মাতানি জেম দেখাই ছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE