নাসিরুদ্দিন শাহ। —ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে অসহিষ্ণুতার আবহ নিয়ে বারবারই মুখ খুলেছেন বিশিষ্ট জনেরা। বুলন্দশহরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ উগরে দিয়ে এ বার নাসিরুদ্দিন শাহ বললেন, এ দেশে এখন তাঁর নিজের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা হয়!
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে নাসিরের বক্তব্যের ভিডিয়ো। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘যারা লাগাতার আইন নিজের হাতে নিচ্ছে, তাদের কিছুই বলা হচ্ছে না। আমরা তো দেখতেই পাচ্ছি, নিহত পুলিশ অফিসারের চেয়ে এখন গরুর গুরুত্ব বেশি।’’ নাসিরের আশঙ্কা, বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়ে গিয়েছে এবং সেই বিপজ্জনক জিনকে ফের বোতলে ঢোকানো কঠিন। পরিস্থিতির আশু উন্নতির আশা তিনি দেখছেন না।
এই প্রসঙ্গেই সন্তানদের কথা তুলেছেন প্রবীণ অভিনেতা। নাসিরের কথায়, ‘‘আমার রীতিমতো দুশ্চিন্তা হয়— আমার সন্তানদের ঘিরে ধরে উন্মত্ত জনতা যদি প্রশ্ন করে, তোমরা হিন্দু না মুসলিম, ওরা উত্তরই দিতে পারবে না। কারণ আমরা (নাসির ও তাঁর স্ত্রী রত্না পাঠক) সচেতন ভাবেই ওদের কোনও ধর্মীয় শিক্ষা দিইনি।’’
আরও পড়ুন: কবে গড়াবে রথ, বিভ্রান্তি রায়ের পরেও
নাগরিক সমাজে কোনও রকম প্রতিবাদী স্বর দেখলেই যে ভাবে এখন দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সংখ্যালঘু হলে পাকিস্তান চলে যেতে বলা হচ্ছে, তা নিয়েও ক্রুদ্ধ ‘অ্যালবার্ট পিন্টো’। বলেছেন, ‘‘এ আমার দেশ। এখান থেকে আমাকে উৎখাত করার অধিকার কারও নেই। চারদিকের অবস্থা দেখে আমি অত্যন্ত রেগে রয়েছি। আমার ধারণা, যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরই রাগ হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ভোটে চোখ রেখে তড়িঘড়ি ব্যাঙ্কে ৪১ হাজার কোটি
কংগ্রেস এবং এনসিপি নাসিরের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেছে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কংগ্রেসের পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ বলেছেন, ‘‘বিজেপি যে ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে, তাতে নাসিরের মতো ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক মাত্রেই ভয় পাচ্ছেন।’’ এনসিপি নেতা নবাব মালিকের মন্তব্য, ‘‘নাসিরের তো চিন্তা হতেই পারে। কিন্তু আরএসএসকেও বুঝতে হবে, মেরুকরণে শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ফায়দা হয় না।’’
প্রত্যাশিত ভাবেই গেরুয়া শিবিরের ছবিটা এর বিপরীত। শুরু হয়ে গিয়েছে ট্রোল। শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ন্ত বলেছেন, ‘‘জনতা জিজ্ঞেস করলে ওঁর সন্তানেরা বলতেই পারে, তারা হিন্দুস্তানি!’’ আরএসএস-ঘনিষ্ঠ রাজ্যসভা সাংসদ রাকেশ সিনহার পরামর্শ, ‘‘সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা হলে আগে রোহিঙ্গাদের এ দেশ ছাড়তে বলুন!’’
সম্প্রতি নাসির বিরাট কোহালির ঔদ্ধত্য নিয়ে মন্তব্য করেও বিতর্ক বাধিয়েছিলেন। পাছে তাঁকে পাকিস্তানে যেতে বলা হয়, তার জন্য আগেভাগেই বলে রেখেছিলেন, তিনি দেশ ছাড়তে রাজি নন! এ দিনও সেই বিতর্কের রেশ চলেছে। ট্রোলবাহিনীর দাবি, নাসির বিরাটকে শিক্ষা দিতে আগ্রহী, কিন্তু নিজের সন্তানদের সুশিক্ষা দেননি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy