বৃহস্পতিবার পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাঠানো উপহার হাতে হীরাবেন। ছবি: পিটিআই।
দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে ব্যক্তিগত সম্পর্কের মূল্য অনেক বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। সেই ঐতিহ্য মেনে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সম্পর্ককে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন নওয়াজ শরিফ। মোদীর মা হীরাবেনের জন্য শাড়ি উপহার পাঠিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বড় কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। অনুষ্ঠানে শরিফের সঙ্গে তাঁর ‘আবেগপূর্ণ’ কথাবার্তা হয়েছিল বলে টুইটারে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটে জেতার পরে মোদীকে মিষ্টি খাইয়েছিলেন হীরাবেন। মোদী টুইটারে জানান, ইসলামাবাদে শরিফ তাঁর মায়ের সঙ্গে বসে সেই দৃশ্য টিভিতে দেখেন। পাক প্রধানমন্ত্রীর মা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন বলে শরিফই জানিয়েছিলেন মোদীকে।
এর পর শরিফের মা-কে উপহার হিসেবে শাল পাঠিয়েছিলেন মোদী। সে জন্য তাঁকে টুইটারে ধন্যবাদ জানান শরিফের মেয়ে মরিয়ম। হীরাবেনের জন্য এ বার পাকিস্তান থেকে এসেছে শাড়ি। ধন্যবাদ জানাতে টুইটারকেই বেছে নিয়েছেন মোদী। বলেছেন, “মা-র জন্য দারুণ শাড়ি পাঠিয়েছেন শরিফজি। আমি কৃতজ্ঞ। খুব তাড়াতাড়ি মাকে শাড়িটা পাঠিয়ে দেবো।”
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, শীর্ষ স্তরে এই ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রতিফলন অন্য স্তরেও পড়বে বলেই আশা করছে দু’পক্ষ। তাতে অনেক জটিল সমস্যা নিয়ে আলোচনার পক্ষে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
কূটনীতিকদের মতে, এখন এই সৌজন্য দেখাতে গিয়ে কিছুটা ঝুঁকিও নিচ্ছেন শরিফ। কারণ, মোদী জমানার গোড়া থেকেই পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা দু’দেশের সম্পর্কে চিড় ধরাতে চেষ্টা করছে বলে দাবি নয়াদিল্লির। প্রথমে জম্মু-কাশ্মীরে হামলা হয়। পরে আক্রান্ত হয় আফগানিস্তানের হেরাটে ভারতের দূতাবাস। হেরাটের ঘটনার পিছনে পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন খোদ আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। তার পরে ওই হেরাট থেকেই ভারতীয় সমাজকর্মী অ্যালেক্সেই প্রেম কুমারকে অপহরণ করেছিল জঙ্গিরা। আফগান সরকার জানায়, আজ তাঁর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তিনি সুস্থই আছেন। ওই ঘটনায় ১২ জন তালিবান জঙ্গিকে গ্রেফতার করে আফগান নিরাপত্তাবাহিনী। তালিবানের সঙ্গে আইএসআইয়ের সম্পর্ক সুবিদিত।
কূটনীতিকদের মতে, শরিফের মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা প্রত্যাশিত ভাবেই ভাল চোখে দেখবে না আইএসআই। আর সেনাবাহিনীর কোপে পড়ে পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকারের গদি হারানোর ঘটনাও নতুন নয়।
তবে আপাতত শরিফ-মোদী দোস্তি নিয়ে আশায় বুক বাঁধতে আপত্তি নেই সাউথ ব্লকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy