Advertisement
০২ মে ২০২৪
New Corona Strain

নতুন করোনা স্ট্রেনে ভারতে আক্রান্ত ছয়

২৫ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেন থেকে প্রায় ৩৩ হাজার জন ভারতে ফিরেছেন।

গত ৯ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশ থেকে ভারতে আসার পরে যাঁদের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হবে।  ছবি পিটিআই।

গত ৯ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশ থেকে ভারতে আসার পরে যাঁদের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হবে।  ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:০০
Share: Save:

ব্রিটেনে দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়ানো করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেনটি চলে এল ভারতেও।

এখনও পর্যন্ত ব্রিটেন-ফেরত ছ’জনের শরীরে করোনার এই নতুন প্রকার বা স্ট্রেনটির সন্ধান মিলেছে। তাঁদের মধ্যে তিন জন ভর্তি রয়েছেন বেঙ্গালুরুর নিমহ্যান্সে, দু’জন হায়দরাবাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজিতে, এক জন পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে। প্রত্যেককে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পরিজনদের পাঠানো হয়েছে কোয়রান্টিনে। সংক্রমিতদের সহযাত্রী ও আত্মীয়-বন্ধুদের উপরেও নজর রয়েছে প্রশাসনের। সম্প্রতি ব্রিটেন-ফেরত এক শিক্ষিকার দিল্লিতে সংক্রমণ ধরা পড়া সত্ত্বেও তিনি ট্রেনে করে নিজের রাজ্য অন্ধ্রে ফিরে গিয়েছিলেন। ট্রেন থেকে নামামাত্রই রেল পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে পাঠায়। এই ছ’জনের মধ্যে আছেন তিনিও।

২৫ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেন থেকে প্রায় ৩৩ হাজার জন ভারতে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১১৪ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এঁরা কেউ নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা বুঝতে প্রত্যেকের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ছ’জনের শরীরে ওই স্ট্রেনের সংক্রমণ মিললেও কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে দেশে রোজ নতুন করোনা আক্রান্তদের অন্তত পাঁচ শতাংশের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

ব্রিটেনে যে হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তা দেখে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পরেও অনির্দিষ্ট কাল বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ভাবছে। স্রেফ গত কাল ব্রিটেনে ৪০ হাজার মানুষের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা গোটা বিশ্বের কাছে উদ্বেগের কারণ বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। তাঁর কথায়, “করোনাভাইরাসের ওই নতুন স্ট্রেন খুব দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। এটাই বেশি চিন্তার।” সেই কারণেই ঠিক হয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশ থেকে ভারতে আসার পরে যাঁদের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হবে।

ভবিষ্যতে যাঁরা বিদেশ থেকে আসবেন, তাঁদেরও নজরে রাখবে প্রশাসন। আইসিএমআরের প্রোটোকল মেনে ফেরত আসার পঞ্চম ও দশম দিনে করোনা পরীক্ষা হবে। সংক্রমণ পাওয়া গেলে তাঁদের নমুনারও জিনোম সিকোয়েন্সের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার জন্য আইসিএমআর ও বায়োটেকনোলজি দফতর হাত মিলিয়ে গোটা দেশে ১০টি পরীক্ষাগারের একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছে। সারা দেশে করোনার জিনগত বিবর্তনের বিষয়টিতে নজর রাখছে বিশেষ গোষ্ঠী।

গোটা দেশ যখন প্রতিষেধকের আশায় দিন গুনছে, তখন ভাইরাসের চরিত্র-পাল্টানো এই নতুন স্ট্রেনের আর্বিভাবের পরে সেটি প্রতিষেধকের কাছে পরাস্ত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে জনমানসে। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা বিজয় রাঘবন আজ বলেন, “ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক কাজ করবে না, এমন বলার মতো কোনও প্রমাণ নেই। ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানা যায়নি।” তবে ভাইরাসের এ ভাবে চরিত্র বদলানোর নেপথ্যে যেমন-তেমন ভাবে ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতাকে দায়ী করেছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ডিজি বলরাম ভার্গব।

তিনি বলেন, “নানা ধরনের ওষুধ ব্যবহারের ফলে ভাইরাসের উপরে ‘ইমিউন প্রেশার’ তৈরি হচ্ছে। তার ফলে নিজেকে বাঁচাতে চারিত্রিক পরিবর্তন করছে ভাইরাস। তাই বিবেচনা করে ওষুধ দেওয়া প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE