Advertisement
E-Paper

সাইবার হামলা রুখতে এ বার নয়া কৌশল

সরাসরি যুদ্ধ নয়। আড়াল থেকে নাশকতা ছড়ানো হচ্ছে। অন্তর্জালে। যার পোশাকি নাম ‘সাইবার সন্ত্রাস’। এর মোকাবিলাতেই এ বার কোমর বাঁধছে ভারত। মূলত পাকিস্তানের দিকে নজর রেখে সম্প্রতি ৬২ পাতার এক সার্বিক ‘ডকট্রিন’ তৈরি করা হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ’-এর তরফে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৯

সরাসরি যুদ্ধ নয়। আড়াল থেকে নাশকতা ছড়ানো হচ্ছে। অন্তর্জালে। যার পোশাকি নাম ‘সাইবার সন্ত্রাস’। এর মোকাবিলাতেই এ বার কোমর বাঁধছে ভারত। মূলত পাকিস্তানের দিকে নজর রেখে সম্প্রতি ৬২ পাতার এক সার্বিক ‘ডকট্রিন’ তৈরি করা হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ’-এর তরফে। সেনাবাহিনীর তিনটি বিভাগের সম্মিলিত এই ‘ডকট্রিন’-এ সম্মুখ সমরের নয়া কৌশলের পাশাপাশি বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সাইবার নাশকতা রোখার বিষয়টিতেও।

গত কয়েক মাস ধরেই পাকিস্তানের হ্যাকাররা সুপরিকল্পিত ভাবে ভারতের একের পর এক প্রতিরক্ষা সংগঠন এবং বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করে যাচ্ছে। গত কাল ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইটও হ্যাকারদের কবলে পড়েছিল বলে আশঙ্কা। গত এক সপ্তাহে ১০টি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ডিফেন্স ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি, আর্মি ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি, কোটা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। হিন্দি ছবির সংলাপের কায়দায় হ্যাকার সংগঠনের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হয়েছে, ‘‘এ তো সবে ট্রেলার! আরও বড় হামলা আসন্ন!’’ গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এই হ্যাকিং চক্রগুলির সঙ্গে পাক রাজনৈতিক নেতৃত্বের সরাসরি সম্পর্ক এখনও খুঁজে না পাওয়া গেলেও কাশ্মীরের জিহাদ এবং পাক জঙ্গিদের সঙ্গে তা সম্পর্কযুক্ত।

সম্প্রতি পাক হ্যাকিং-এর নিশানায়

• ডিফেন্স ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি,

• আর্মি ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি,

• কোটা বিশ্ববিদ্যালয়,

• আইআইটি-দিল্লি

• বি এইচ ইউ

• বোর্ড অব রিসার্চ ইন নিউক্লিয়ার সায়েন্স

• ন্যাশনাল এরোনটিক্স লিমিটেড

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ডকট্রিনে বলা হচ্ছে, সাইবারস্পেস-সহ ভারতীয় সামরিক ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ রুখতে তিনটি বিভাগের (বায়ু, নৌ এবং স্থল) মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করা হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের কথায়, ‘‘সাইবার নিরাপত্তার প্রযুক্তিগত মান প্রতিনিয়ত বাড়ানো এবং বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তিগত কৌশলের সঙ্গে বিনিময় ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাক সেনা, আইএসআই এবং সরকারি মদতপুষ্ট জঙ্গি — আমাদের গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই সব ক’টি ক্ষেত্র থেকেই প্রবল চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, ভারতীয় সামরিক নকশা জানার জন্য সম্প্রতি উঠে পড়ে লেগেছে পাকিস্তান। চিনেরও মদত রয়েছে এর পিছনে।

আরও পড়ুন: ‘আজাদি’ চাইলে কথা নয়

প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি করে ম্যালওয়্যার (কম্পিউটার ভাইরাস) তৈরি হচ্ছে পাকিস্তানে। ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাল্টা দক্ষ পেশাদার নিয়োগ করে তৈরি করছে ‘অ্যান্টি ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার’। গোপন তথ্য ও নথিকে যতটা সম্ভব, ‘অ্যানহ্যাকেবল ইলেকট্রনিক পাসওয়ার্ডের’ আওতায় আনা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ঠেকাতে ‘ক্রিপ্টোগ্রাফিক কন্ট্রোল’-কে জোরদার করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সাইবার সন্ত্রাস ঠেকানোর প্রক্রিয়াও প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছে। আমাদের চ্যালেঞ্জ, নিজেদের সে ভাবে উন্নত করা। নতুন প্রযুক্তিকে করায়ত্ত করা। এ ব্যাপারে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, সামরিক বাহিনীর নিজস্ব সাইবার অডিট ব্যবস্থা ইত্যাদি তো রয়েছেই। কিন্তু শুধুই প্রযুক্তির উপর নির্ভর করলে হবে না।’’ প্রতিরক্ষা সূত্রের বক্তব্য, কম্পিউটার, ওয়েবসাইট, পেন ড্রাইভ ও সিডি-র ব্যবহারের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতা জরুরি। ভুয়ো ফোন অথবা স্প্যাম মেলের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। এগুলি নিয়ে নিয়মিত কর্মশালাও চালু করা হবে।

Cyber Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy