কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে (এনরেগা) টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটানোয় ক্ষুব্ধ ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার।
এত দিন এই প্রকল্পে শ্রমিকের মজুরি দেওয়া হত ‘ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার’ পদ্ধতিতে। এতে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে এনরেগা শ্রমিকের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হতো।
এই পদ্ধতিতে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। বিশেষ করে ইউপিএ জমানার দ্বিতীয় দফায় বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এনরেগার মজুরি বণ্টন নিয়ে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তোলে। ত্রিপুরাতেও বিরোধী কংগ্রেস এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।
শেষ পর্যন্ত সেই পদ্ধতির পরিবর্তন করল কেন্দ্রীয় সরকার। ১ এপ্রিল থেকে ‘পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের’ মাধ্যমে এনরেগা শ্রমিকদের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এই মর্মে গত মাসের শেষের দিকে মন্ত্রক নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজ্যগুলির কাছে।
নয়া ব্যবস্থায় এনরেগার মজুরি কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সরাসরি শ্রমিক তথা সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে। রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা থাকবে না। কেন্দ্রের দাবি, এতে ১০০ দিনের কাজে মজুরি বণ্টনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।
ত্রিপুরার গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী নরেশ জামাতিয়া আজ বলেন, ‘‘এতে রাজ্যের ক্ষমতায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিরোধী।’’ সিপিএমও এই নয়া ব্যবস্থায় খুশি নয়। দলের মুখপাত্র গৌতম দাশ বলেন, ‘‘সিপিএম এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে।’’
কয়েক সপ্তাহ ধরেই ত্রিপুরার বিভিন্ন ব্লকে ‘১০০ দিনের কাজের’ মজুরি বণ্টন নিয়ে অশান্তি তৈরি হয়েছে। ৩৪ জন সরকারি আধিকারিক উত্তেজিত এনরেগা শ্রমিকদের হাতে জখম হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে এক জন ওসি, এক জন এসডিপিও-সহ ৬ পুলিশকর্মী এবং দু’জন বিডিও রয়েছেন।
শ্রমিকরা চড়াও হয়েছেন হয়েছেন থানা, বিডিও অফিস, গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায়। কোনও কোনও এলাকায় উত্তেজিত শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে শূন্যে গুলি চালাতেও হয়েছে।
গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী বলেন, ‘‘টাকার কোনও অভাব নেই। তিন-চার দিনের মধ্যেই এনরেগার বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy