Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লোয়ার মৃত্যু কী কারণে, নতুন তথ্য দিলেন প্রশান্ত ভূষণ

আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টে দাবি তুললেন, বিচারক লোয়ার হিস্টোপ্যাথলজি ও ইসিজি রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়নি। এই হিস্টোপ্যাথলিজ রিপোর্ট মহারাষ্ট্র সরকার আদালতে জমা দেননি বলে ভূষণের অভিযোগ।

ব্রিজগোপাল হরিকিষাণ লোয়া

ব্রিজগোপাল হরিকিষাণ লোয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৫
Share: Save:

বিচারক ব্রিজগোপাল হরিকিষাণ লোয়ার মৃত্যু রহস্যে এ বার নতুন মোড়।

আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টে দাবি তুললেন, বিচারক লোয়ার হিস্টোপ্যাথলজি ও ইসিজি রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়নি। এই হিস্টোপ্যাথলিজ রিপোর্ট মহারাষ্ট্র সরকার আদালতে জমা দেননি বলে ভূষণের অভিযোগ।

বিচারক লোয়ার মৃত্যুতে তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি চলছিলই। সেই শুনানির মধ্যেই অন্তর্বর্তী আর্জি পেশ করতে ভূষণের সংস্থা ‘সেন্টার ফর পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন’ দাবি তুলেছে, তথ্যের অধিকার আইন কাজে লাগিয়ে তাঁরা এই হিস্টোপ্যাথলজি রিপোর্ট জোগাড় করেছেন। তার সঙ্গে ইসিজি রিপোর্ট এইমস-এর দুই প্রাক্তন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা রায় দেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে লোয়ার মৃত্যু হয়নি। ট্রমা বা বিষক্রিয়ার ফলে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্ট ওই আর্জি খতিয়ে দেখতে রাজি হয়েছে।

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর বিরুদ্ধে সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সং‌ঘর্ষ মামলা শুনছিলেন বিচারক লোয়া। তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তাঁকে অমিত শাহর তরফে ১০০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। লোয়ার বোন অভিযোগ তুলেছেন, বোম্বে বাইকোর্টের বিচারপতি মোহিত শাহও লোয়াকে চাপ দিচ্ছিলেন। লোয়ার মৃত্যুর পরে নতুন বিচারক এম বি গোসাভি দায়িত্বে আসার পরেই অমিত শাহ বেকসুর খালাস পেয়ে যান।

এই ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবিতে বিচারপতিরাও পক্ষপাতিত্ব করেছেন বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়েই অভিযোগ তুলেছেন প্রবীণ আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে। প্রধান বিচারপতির এজলাসেই তিনি বলেন, ‘‘আমি এমন কোনও মামলা দেখিনি যেখানে গোটা বিচারব্যবস্থা এক জন ব্যক্তির তাবেদারি করছে।’’

এতে আপত্তি তোলেন বিচারপতি এ এম খানউইলকর। তিনি দুষ্মন্তকে এই ধরনের লম্বাচওড়া কথা না বলতে নির্দেশ দেন। বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় বলেন, হাত গুটিয়ে বসে থেকে সমস্যা কাটিয়ে দেওয়ার কোনও ইচ্ছা তাঁদের নেই। কিন্তু তা বলে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতিদের অবিশ্বাস করে রায় দেওয়ারও ইচ্ছে নেই। দুষ্মন্তের প্রশ্ন ছিল, বোম্বে হাইকোর্ট ও মহারাষ্ট্রের জেলার কর্মরত বিচারপতিরা কেন এক সুরে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলছেন, বিচারক লোয়ার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে? কেন সবাই তদন্তে বাধা দিচ্ছেন?

এই প্রশ্নে মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবী মুকুল রোহতগি প্রশ্ন তোলেন, কেন বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে! অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা আপত্তি তোলেন। দাভে মেটার যুক্তি উড়িয়ে বলেন, ‘আপনি নিজেই ১৫ বছর অমিত শাহর আইনজীবী ছিলেন।’ মহারাষ্ট্রের হয়ে হরিশ সালভে আপত্তি তোলায় তাঁকেও অমিত শাহর পুরনো আইনজীবী হিসেবে আখ্যা দেন দাভে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE