জম্মু-কাশ্মীরে বিক্ষোভ বার বারই এই রকম হিংসাত্মক হয়ে উঠছে। —ফাইল চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীরে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে ‘নতুন অস্ত্র’ আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। কী সেই অস্ত্র? আপাতত তা গোপনই রাখতে চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সুপ্রিম কোর্টকে এই নতুন ব্যবস্থার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত যেন বিষয়টি গোপনই রাখে, অনুরোধ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি।
জম্মু-কাশ্মীরে প্রশাসন বা নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মাঝেমধ্যেই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে আগে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, লেজার ডেজলার ইত্যাদি ব্যবহার করা হত। কিন্তু সে সব অস্ত্রকে ফাঁকি দেওয়ার কৌশল ক্রমশ রপ্ত করে ফেলছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তাই আনা হয়েছিল পেলেট গান। তাতে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ হচ্ছিল ঠিকই, কিন্তু মারাত্মক জখম হচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা, এমনকী দৃষ্টিশক্তিও যাচ্ছিল কারও কারও। উপত্যকার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাই এ বার নতুন কোনও ব্যবস্থা উদ্ভাবন করতে চলেছে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টকে সে বিষয়টি জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। তবে সর্বোচ্চ আদালতকে সরকারের অনুরোধ, আপাতত বিষয়টি গোপনই রাখা হোক।
বিক্ষোভ সামাল দিতে যে নতুন ব্যবস্থা আনার কথা সরকার ভাবছে, তা ঠিক কী? এখন সে কথা গোপনই রাখতে চায় কেন্দ্র। —প্রতীকী ছবি।
কাশ্মীর উপত্যকায় বিক্ষোভ ঠেকাতে নিরাপত্তা বাহিনী যে পেলেট গান ব্যবহার করছিল, তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীর বার অ্যাসোসিয়েশন। ওই ধরনের বন্দুক থেকে ছুটে আসা ঝাঁকে ঝাঁকে ছররা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিঁধে যায় পেলেট বা ছররা আগাতে অনেকের চোখও নষ্ট হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সার্জারির মাধ্যমে শরীর থেকে বার করতে হয় পেলেট। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই সব পেলেট শরীর থেকে বার করা যায়নি বলে খবর। তাই পেলেট গানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল উপত্যকায়। সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বার অ্যাসোসিয়েশন। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, কোনও জমায়েত হিংসাত্মক হয়ে উঠলে তা ছত্রভঙ্গ করার জন্য বিকল্প পদ্ধতির কথা সরকার ভাবতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: কোরানে তিন তালাক বলে কিছু নেই: উপরাষ্ট্রপতির স্ত্রী সরব আলিগড়ের মাদ্রাসায়
গত মাসেই সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেছিল, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে অন্য কোনও পন্থার কথা কেন্দ্র ভাবছে কি না? জবাবে ২০১৬-র অক্টোবরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তৈরি করা একটি রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে পেশ করেছে সরকার। সেই রিপোর্টেই লেখা রয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে সরকার কোন নতুন অস্ত্র প্রয়োগের কথা ভাবছে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেন, ওই রিপোর্টটির প্রতিলিপি গ্রহণ না করতে। রিপোর্টের প্রতিলিপি সুপ্রিম কোর্ট গ্রহণ করলে, তা আদালতের দস্তাবেজ হয়ে উঠবে। আদালতে থাকার সময় ওই চূড়ান্ত গোপনীয় রিপোর্ট যদি কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত হাতে যায়, তা হলে সরকারের পরিকল্পনা আগে থেকেই ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই কারণেই রিপোর্টের প্রতিলিপি আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy