বিহারিদের জন্য বিহারের চাকরিতে ৮০ শতাংশ সংরক্ষণ নিয়ে সর্বদলীয় সহমত প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ গত কালই রাজ্যের সরকারি চাকরি ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা ‘দখল’ করছে বলে অভিযোগ করেন। আইন করে রাজ্যের সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ সংরক্ষণের দাবি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান তিনি। এরপরেই আজ মুখ খুললেন নীতীশ।
নীতীশ এ দিন বলেন, ‘‘স্থানীয়দের সংরক্ষণের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক নয়। যদি সমস্ত রাজনৈতিক দল এ নিয়ে আলোচনার পরে একমত হয়, তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতেই পারে।’’ মিশন ২০১৯ এর লক্ষ্যে নামা নীতীশ কুমার লালুর এই ‘প্রাদেশিকতা’-র চালের বিরুদ্ধে কথা বলে রাজ্যে নিজের রাজনৈতিক জমি হারাতে চাইছেন না। আবার একই ভাবে নিজের সর্বভারতীয় ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ করতে চাইছেন না। সে কারণেই সাবধানি তিনি। ‘সর্বদলীয় সহমত’-এর প্রস্তাবে নীতীশ আগুনে ‘ছাই চাপা’ দিতে চাইছেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
হরিয়ানার জাঠ আন্দোলন, গুজরাতের পটেল আন্দোলন এবং মহারাষ্ট্রে স্থানীয়দের সংরক্ষণ নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের যথেষ্ঠ মাথাব্যথা রয়েছে। তার উপরে লালুপ্রসাদ বিহারি সংরক্ষণের বিষয়টি তোলায় তা নতুন মাত্রা পাবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দিতেও চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই স্থানীয়দের সংরক্ষণ নিয়ে নানা সময়ে আন্দোলন হয়েছে। স্থানীয়দের স্বার্থরক্ষায় কেন্দ্রের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড সফরের কথা উল্লেখ করেন তিনি। সেখানেও স্থানীয়দের সংরক্ষণের আন্দোলন রয়েছে বলে জানান নীতীশ।
বিহারি স্বাভিমানের কথা বলে নির্বাচনে লড়েছিল মহাজোট। সেই জোটের নেতা হিসেবেই নীতীশ কুমার ‘বিহারি বনাম বাহারি’ স্লোগান তুলে নির্বাচনে বাজিমাৎ করেন। স্বাভাবিক ভাবে দলের শক্তি অটুট রাখতে লালুপ্রসাদের দাবিতে ‘সম্মত’ও হয়েছেন তিনি। নীতীশ বলেন, ‘‘আমি এবং আমার দল বিহারে সরকারি চাকরিতে স্থানীয়দের অগ্রাধিকারের দাবির সমর্থন করি।’’ তবে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও রাজনৈতিক সহমতের প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য তাঁর।
উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে কোনও ভাবেই বিহারে স্থানীয়দের সংরক্ষণের বিষয়টি আনতে চান না নীতীশ। ঘনিষ্ঠ মহলে লালুপ্রসাদের দাবি ও তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ ঘুরে বিজেপি-বিরোধী প্রচার করলেও নীতীশের আসল লক্ষ্য মুলায়মকে গদিচ্যুত করা। সেই চেষ্টায় জল ঢালতেই লালুপ্রসাদের এই ‘বিহারি-চাল’ বলে মনে করছেন নীতীশ ঘনিষ্ঠরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy