থমথমে পরিবেশ। এক অস্বস্তিকর চাপা উত্তেজনাও রয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে নতুন করে কোনও অশান্তি ছড়ায়নি অসমের পশ্চিম কার্বি আংলং জেলায়। অশান্তি কবলিত এলাকাগুলিতে মোতায়েন রয়েছেন প্রচুর পুলিশকর্মী। আধাসেনা এবং সেনা জওয়ানদেরও মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য।
অসমের এই জেলায় বহিরাগতদের উচ্ছেদ নিয়ে টানাপড়েন চলছে অনেক দিন ধরে। জনজাতি এলাকায় হিন্দিভাষীরা জমি দখল করে নিচ্ছেন— এই অভিযোগে স্থানীয় কার্বি গোষ্ঠী এবং বহিরাগতদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এই ‘জমিদখলে’র বিরুদ্ধে আন্দোলনও চালাচ্ছে কার্বি জনগোষ্ঠী। এরই মধ্যে মঙ্গলবার খবর ছড়ায়, কার্বি গোষ্ঠীর এক নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চলছে ভাঙচুর, তাণ্ডব। বাড়িতে অগ্নিসংযোগেরও অভিযোগ ওঠে।
অশান্তি কবলিত এলাকাগুলি বৃহস্পতিবার সকালেও থমথমে। তবে নতুন করে কোনও অশান্তির খবর মেলেনি। অসমের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “পরিস্থিতি এখন শান্তই রয়েছে। কোনও অশান্তির খবর নেই। আমাদের বাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। সংবেদনশীল সকল এলাকায় টহল দিচ্ছেন তাঁরা।” অসম পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ) এবং সিআরপিএফ-এর পাশাপাশি সেনা জওয়ানেরাও এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন বলে জানান ওই আধিকারিক।
আরও পড়ুন:
অশান্তির ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর খবর মেলে। অশান্তির সময়ে কার্বি গোষ্ঠীর একদল বিক্ষুব্ধ জনতা একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। পরে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিশেষ ভাবে সক্ষম এক যুবকের দেহ। অন্য দিকে, জনজাতি গোষ্ঠীর এক ব্যক্তিও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। বিক্ষুব্ধদের দাবি, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আধিকারিক সূত্রে খবর, বুধবার রাতে দুই নিহতেরই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে।
অশান্তিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম কার্বি আংলং জেলার খেরোনি এলাকায়। এই এলাকায় কার্বি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বিহারি, বাঙালি এবং নেপালিদেরও বসতি রয়েছে। বস্তুত, অশান্তি ছড়ানোর পর থেকেই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্ফু জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও। নতুন করে অশান্তি না ছড়ালেও এখনই কার্ফু প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। বন্ধ থাকছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও।
পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে। তবে কার্ফু এবং মোবাইল ডেটা পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত আপাতত বহাল থাকবে। তিনি জানান, পরিস্থিতির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে এবং তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরবর্তী কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা ঘোষণা করে দেওয়া হবে।