Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হজ যাত্রার জন্য ভর্তুকি বন্ধ কেন্দ্রের

দিল্লিতে আজ সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হজে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৩
Share: Save:

হজ যাত্রায় ভর্তুকি ২০২২ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার চার বছর আগেই সেই ভর্তুকি তুলে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্র স্পষ্টই জানিয়েছে, তোষণ ছাড়াই সংখ্যালঘু ক্ষমতায়নের জন্য এই পদক্ষেপ।

দিল্লিতে আজ সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হজে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হচ্ছে। সেই টাকাটা এ বার থেকে সংখ্যালঘুদের শিক্ষায় ব্যবহার করা হবে। রাজনীতিকদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতেই হত। কিন্তু প্রক্রিয়ায় গতি এনে রাজনৈতিক ফয়দা লুটতে চাইছে মোদী সরকার। তিন তালাকের মতোই এ ক্ষেত্রেও তারা বোঝাতে চাইছে, সংখ্যালঘুদের প্রকৃত প্রগতিই বিজেপির লক্ষ্য। ভর্তুকি তোলা সত্ত্বেও এ বার রেকর্ড সংখ্যক মানুষ হজে যাচ্ছেন বলে দাবি মন্ত্রীর। সংখ্যাটা ১ লক্ষ ৭৫ হাজার। নকভির মতে, ‘‘তোষণ না-করে সম্মানের সঙ্গে সংখ্যালঘু উন্নয়নই লক্ষ্য মোদী সরকারের।’’

২০১২-য় ইউপিএ জমানাতেই দশ বছরের মধ্যে হজে ভর্তুকি তুলে দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এই সরকার তা তুলে দিল নির্ধারিত সময়সীমার চার বছর আগেই। কেন্দ্র আজ যে ভাবে ‘তোষণ’ কথাটির উল্লেখ করে পরোক্ষে কংগ্রেসকে দুষছে, তাতে আপত্তি জানিয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদের মতে, ‘‘এই ভর্তুকির ফায়দা এয়ার ইন্ডিয়া ও সৌদি বিমান সংস্থাই পেত। তাই আমাদের সময়েই ভর্তুকি তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখনকার ৬৫০ কোটি টাকার ভর্তুকি অনেকটাই কমে গিয়েছে। কিন্তু এই সরকার যে ভাবে তোষণের রাজনীতির করি না বলে নিজেদের ঢাক পেটাচ্ছে, তাতে আমাদের আপত্তি আছে।’’ পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী তথা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নেতা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, ‘‘হজযাত্রীদের জন্য পরিষেবা আয়োজনে কেন্দ্রের একটা ভূমিকা থাকে। তবে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মীয় আচরণের জন্য সরকার টাকা দেয়, এমনটা নয়। অমরনাথ যাত্রার ক্ষেত্রেও তো পরিষেবা সংক্রান্ত ব্যবস্থা করে দেয় সরকার!’’ পুরনো প্রথা এ ভাবে তুলে দেওয়া উচিত নয় বলেও মনে করেন তিনি।

বিরোধীদের দাবি, ভর্তুকি তুলে দিলেও এখন হজযাত্রীদের কী ভাবে পাঠানো হবে, সরকারের তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ, এক এক এলাকা থেকে বেরোলে এক এক রকম বিমান ভাড়া হয়। আবার মওকা বুঝে ভাড়াও বাড়ানো হয়। নকভি জানিয়েছেন, এ বার একাধিক স্থান থেকে বিমান ধরার বিকল্প রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ, শ্রীনগরের কেউ চাইলে দিল্লি থেকেও উড়তে পারেন। জলপথেও হজযাত্রীদের পাঠাতে চেয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ক’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই ৪৫ বছরের বেশি বয়সের যে সব মহিলা হজে যেতে চান, তাঁদের সবার আবেদন মঞ্জুর করা হবে। আজ নকভি জানান, এমন ১৩০০ মহিলার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE