Advertisement
E-Paper

ভারতের অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক সারলেন কানাডার ‘অজিত ডোভাল’, আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ!

মার্ক কার্নে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে পরিস্থিতি গত কয়েক মাসে উন্নত হতে শুরু করেছে। কানাডায় আয়োজিত জি৭ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানান ট্রুডোর উত্তরসূরি কার্নে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৩৪
NSA Ajit Doval meets his Canadian counterpart in New Delhi, discussion on rebuilding trust

কানাডার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাতালিয়া জি ড্রুইনের সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ছবি: পিটিআই।

কানাডায় খলিস্তানপন্থী সংগঠনগুলিকে ভারতবিরোধী ভূমিকা নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক সারলেন কানাডার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাতালিয়া জি ড্রুইন। গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বৈঠক হয় দু’দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টার। বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দু’দেশের পরস্পরের উপর আস্থা ফেরানোর বিষয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সময় থেকেই সে দেশে ভারতবিরোধী এবং খলিস্তানপন্থীদের কার্যকলাপ নিয়ে একাধিক বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। অন্য দিকে খলিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যায় ভারতের হাত থাকতে পারে বলে দাবি করেছিল কানাডা। যদিও সেই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে নয়াদিল্লি। এমনকি কানাডার নির্বাচনে নয়াদিল্লি নাক গলাতে পারে, এমনও সন্দেহ প্রকাশ করেছিল অটোয়ার গুপ্তচর সংস্থা। পরবর্তী সময়ে সরকার বদলেও পরেও খলিস্তানপন্থী সংগঠনগুলির ভূমিকায় রাশ টানতে পারেনি অটোয়া।

স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে ২০২২ সাল থেকে কানাডার রাজধানী অটোয়ার ভারতীয় হাই কমিশন এবং কানাডার বিভিন্ন শহরে ভারতীয় কনসুলেটে ধারাবাহিক ভাবে হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেখিয়েছে নিষিদ্ধ কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠী ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)। তা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ভারত এবং কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক চাপানউতর চলে এসেছে। তবে মার্ক কার্নে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে পরিস্থিতি গত কয়েক মাসে উন্নত হতে শুরু করেছে। কানাডায় আয়োজিত জি৭ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানান ট্রুডোর উত্তরসূরি কার্নে। ওই সময় কানাডার সঙ্গে ভারতের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্ককে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন মোদীও।

দিল্লি এবং অটোয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সমীকরণ উন্নত হওয়ার আভাস মিলেছিল তখনই। এ বার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মসৃণ করতে ভারতে এলেন কানাডার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড্রুইন। কানাডার উপবিদেশমন্ত্রী ডেভিড মরিসনও ভারতে আসেন। ঘটনাচক্রে, অতীতে ট্রুডো জমানায় ড্রুইন এবং মরিসনই ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। কানাডায় খলিস্তানিদের নিশানা করার নেপথ্যে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইন্ধন রয়েছে বলে গত বছরের অক্টোবরে অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁরা। ওই ঘটনার প্রায় ১১ মাস পরে এ বার দিল্লিতে এসে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা সারলেন সেই ড্রুইন এবং মরিসনই। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। পরে শনিবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্যই কানাডার প্রতিনিধিরা ভারতে এসেছেন। পাশাপাশি জি৭ সম্মেলনের সময়ে মোদী এবং কার্নে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন, সেগুলি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।

বস্তুত, ট্রুডো জমানায় কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হলেও কার্নে ক্ষমতায় এসেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করার বার্তা দেন। জি৭ সম্মেলনে সেই সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে বলে দাবি করেন দুই রাষ্ট্রপ্রধানই। কানাডা এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলেই ব্যাখ্যা করেছিলেন মোদী। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘দুই দেশের বন্ধুত্বকে মজবুত করার জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী আমরা।’’ কার্নের দাবি, ‘‘দুই দেশই জ্বালানি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) সহযোগিতার কথা ভাবছে।’’ শনিবার বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, শীর্ষ রাজনৈতিক স্তরে উভয় দেশই পারস্পরিক আস্থা পুনর্প্রতিষ্ঠা এবং সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছে। এ ছাড়া সন্ত্রাস দমন, আন্তর্জাতিক স্তরে সংগঠিত অপরাধ দমন এবং দু’দেশের গোয়েন্দাদের মধ্যে তথ্য বিনিয়মের বিষয়েও ইতিবাচক কথাবার্তা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy