Advertisement
E-Paper

অক্ষিকে ঘিরে ভোট রাজনীতি

তামিলনাড়ু, কেরল ও লাক্ষাদ্বীপে তাণ্ডব চালানোর পরে সাইক্লোন অক্ষির নিশানায় এখন মহারাষ্ট্র ও গুজরাত।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:২৬
অঝোর: মেজাজ নরম সাইক্লোন অক্ষির। তার জেরে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।

অঝোর: মেজাজ নরম সাইক্লোন অক্ষির। তার জেরে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।

ভোটের হাওয়া এখনও সে ভাবে না উঠুক, ভোট-বাজারে সাইক্লোন অক্ষি গুজরাতে পৌঁছতেই নড়েচড়ে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অক্ষির দাপটে অমিত শাহ, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার মতো বিজেপির নেতা-নেত্রীদের সভা আগেই বাতিল হয়েছে। রাহুল গাঁধী আকাশে অনেক ক্ষণ আকাশে ঘুরপাক খেয়ে একটি সভা করতে পারলেও বাকিগুলি বাতিল করতে হয়েছে। কিন্তু দিনভর গুজরাতের ঝড়ের-রাজনীতির হাওয়াও চলল সমান্তরালে।

অক্ষির দাপট ক’দিন ধরেই লাক্ষাদ্বীপ, কেরল, তামিলনাড়ুতে চলছে। কিন্তু ‘প্রকাশ্যে’ এমন ভাবে সচেতন হতে দেখা যায়নি প্রধানমন্ত্রীকে, যেমনটি আজ হয়েছে। আজ সকালেই তিনি টুইট করে গুজরাতের বিজেপি কর্মীদের আবেদন জানান, মানুষের পাশে থাকুন। দিল্লি থেকে তিনি লাগাতার নজর রাখছেন। সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলে রেখেছেন যাবতীয় সহযোগিতার জন্য। অক্ষিকে পরোয়া না করেই আজ গুজরাত গিয়েছিলেন রাহুল। শেষ পর্যন্ত সভা বাতিলের পর ফিরে আসতে হয় দিল্লিতে। সন্ধেয় তিনিও টুইট করে কংগ্রেস কর্মীদের আবেদন জানান দুর্গতদের সব রকম সাহায্য করার জন্য।

দুই শিবিরের সহানুভূতি নিয়েই তুঙ্গে ওঠে রাজনীতি। রাহুলের টুইটের পরে বিজেপি বলতে শুরু করে, আবেদন জানাতে অনেক দেরি করে ফেলেছেন রাহুল। এ তো কুমীরের কান্না। গুজরাতে বন্যার সময় কংগ্রেসের বিধায়কেরা তো মানুষকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে কর্নাটক পালিয়েছিলেন। আর কংগ্রেস বলছে, এত দিন তো অন্যান্য রাজ্যের ঝড়ে প্রধানমন্ত্রীর কান্নাও চোখে পড়েনি। আর কর্নাটকে কংগ্রেস বিধায়কদের যেতে হয়েছিল বাঁচতে। অমিত শাহরা রাজ্যসভার ভোটে জিততে দল ভাঙানোর খেলায় নেমেছিলেন।

তামিলনাড়ু, কেরল ও লাক্ষাদ্বীপে তাণ্ডব চালানোর পরে সাইক্লোন অক্ষির নিশানায় এখন মহারাষ্ট্র ও গুজরাত। তবে প্রথম দিকের সেই উগ্র চেহারাটি আর নেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানাচ্ছে, তামিলনাড়ু ও কেরলে অক্ষির দাপটে এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৩৯ জন। দুই রাজ্য মিলিয়ে নিখোঁজের সংখ্যা অন্তত ১৬৭।

সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে মহারাষ্ট্র সরকার আগেই ঘোষণা করে রেখেছিল, উপকূল-ঘেঁষা চার জেলার সব স্কুল-কলেজ আজ বন্ধ থাকবে। তবে এই রাজ্যে আজ তেমন বিধ্বংসী চেহারা নেয়নি অক্ষি। পূর্ব-মধ্য আরব সাগর দিয়ে উত্তর দিকে এগোতে এগোতে সাইক্লোনটির গতি কিছুটা কমে এসেছে। সর্বশেষ ছিল ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার। এ দিন সন্ধের পরে অক্ষির কেন্দ্রটি ছিল মুম্বই থেকে ১৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে ও সুরাত থেকে ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। এর জেরে বৃষ্টি হয়েছে রাজকোট, সুরাত-সহ দক্ষিণ গুজরাতের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এ দিনের ভোট-প্রচার ভেস্তে দেওয়ার পক্ষে যা ছিল যথেষ্ট। গভীর রাতে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি বাড়ার আশঙ্কা থাকায় মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী এ দিন অক্ষি-মোকাবিলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বৈঠক করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য জানাচ্ছে, অক্ষি নিয়ে তেমন আশঙ্কার কিছু নেই ভোটমুখী গুজরাতের। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় গুজরাত ও মহারাষ্ট্রে হাল্কা থেকে ভারী বৃষ্টি হবে। সমুদ্রও থাকবে অশান্ত। সে কারণে দক্ষিণ গুজরাত ও উত্তর মহারাষ্ট্রের ধীবরদের আপাতত সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। এ দিন মেঘ জমছে বঙ্গোপসাগরে বৃষ্টি হয়েছে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। আবহাওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উর্ধ্বমুখী হয়ে পশ্চিম উপকূল বরাবর আতঙ্ক ছড়ানোর পরে মুখ ঘুরিয়ে অক্ষি ফের ধেয়ে যেতে পারে লাক্ষাদ্বীপের দিকে।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো আজ হয়েছে, অক্ষি-দুর্গতদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫ কোটি টাকা দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ত্রাণ উদ্ধার নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দক্ষিণের দুই রাজ্যেই। এরই সূত্রে মাদ্রাজ হাইকোর্ট দুর্গতদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে ওষুধ, পানীয় জল ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে পলামীস্বামী সরকারকে।

Ochki Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy