Advertisement
E-Paper

সাইকেলে ওটা কে বাঁধা? ‘আমার মা!’

মাচায় শোয়ানো একটা মৃতদেহ। আপাদমস্তক ঢাকা। পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে দু’একটা মোটরবাইক। সাইকেলের পিছনে মাঝেমধ্যে দেখা যাচ্ছে আর একটা ছেলেকে। এ ছাড়া আর কোনও পথচারী নেই ভিডিয়ো ক্যামেরার পাল্লার মধ্যে। 

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৪
শেষ যাত্রা: সুরজ সিংঘারিয়ার সাইকেলে বাঁধা তার মায়ের মৃতদেহ। এই ছবিই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

শেষ যাত্রা: সুরজ সিংঘারিয়ার সাইকেলে বাঁধা তার মায়ের মৃতদেহ। এই ছবিই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সাইকেলটা হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সতেরো বছরের কিশোর। মেঠো রাস্তায় ঠাঠা রোদ। লম্বালম্বি দু’টো বাঁশ বাঁধা রয়েছে সাইকেলের দু’পাশে। আর সেই বাঁশের ওপর ভর করে বাঁধা বাঁশের মাচা। সাইকেলের সিটের ঠিক পিছনেই।

মাচায় শোয়ানো একটা মৃতদেহ। আপাদমস্তক ঢাকা। পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে দু’একটা মোটরবাইক। সাইকেলের পিছনে মাঝেমধ্যে দেখা যাচ্ছে আর একটা ছেলেকে। এ ছাড়া আর কোনও পথচারী নেই ভিডিয়ো ক্যামেরার পাল্লার মধ্যে।

হাঁটতে হাঁটতে পিচরাস্তা। ভিড়, চারচাকা। ক্যামেরা এ বার সাইকেলের সামনে। নেপথ্য কণ্ঠ প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, ‘‘কী নাম তোর?’’

—সুরজ।

—সুরজ কী?

—সিংঘারিয়া।

—(সাইকেলে বাঁধা দেহের দিকে দেখিয়ে) ইনি কে?

মাথায় আধময়লা গামছা চাপানো ছেলে উত্তর দেয়, ‘‘আমার মা।’’

ওড়িশার কড়পাবাহাল গ্রামের ছেলেটা এর পরে একটা জঙ্গলে গিয়ে মায়ের দেহ কবর দেয়। একাই। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ‘নিচু জাতের’ বলে সুরজের মায়ের শেষকৃত্যে এগিয়ে আসেনি গ্রামের কেউ। স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেমেয়েকে নিয়ে নিজের বাপ-ঠাকুর্দার যে গ্রামে গিয়ে উঠেছিলেন সুরজের মা, ৪৫ বছরের জানকীদেবী।

জল আনতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন জানকী। আর ওঠেননি।

সেই ওড়িশা। ভেসে ওঠে ২০১৬-র অগস্টের একটা ছবি। হাসপাতাল অ্যাম্বুল্যান্স দিতে না-পারায় স্ত্রীর মাদুর-জড়ানো দেহ কাঁধে হাঁটছেন মাঝবয়সি এক মানুষ। দানা মাঝি।

ঝাড়সুগুদা জেলার ‘অচ্ছুত’ সুরজও হেঁটে গিয়েছে গ্রাম থেকে জঙ্গলে। প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা। মা ছাড়া তার সঙ্গে তখন আর কেউ নেই।

Death Dead Body Odisha Caste
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy