বাবাকে ভ্যানে বসিয়ে হাসপাতালের পথে সুজাতা। ছবি: সংগৃহীত।
একটি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন বাবা। চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হাসপাতাল তো গ্রাম থেকে অনেক দূরে! অত দূরের পথ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ করে নাবালিকা। কিন্তু অনেক টাকা ভাড়া চাওয়ায় শেষমেশ বাবাকে একটি ভ্যানে বসিয়ে, সেটি নিজেই চালিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেয়। যে ঘটনা নজর কেড়েছে পথচলতি বহু মানুষের। শুধু তাই-ই নয়, প্রশাসনের কাছেও এই খবর পৌঁছয়। ঘটনাটি ওড়িশার ভদ্রকের।
ওই জেলার নন্দীগান গ্রামের বাসিন্দা সুজাতা শেঠি। গত ২২ অক্টোবর একটি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে আহত হয়েছিলেন সুজাতার বাবা শম্ভুনাথ। তাঁদের বাড়ি থেকে হাসপাতাল ১৪ কিলোমিটার দূরে। অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে বাবাকে ভ্যানে চাপায় সুজাতা। তার পর ধামনগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, আরও ভাল চিকিৎসার জন্য ৩৫ কিলোমিটার দূরে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ২৩ অক্টোবর আবার ভ্যান চালিয়ে শম্ভুনাথকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় সুজাতা।
সুজাতা জানিয়েছে, ভদ্রক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকেরা পরীক্ষার করার পর শম্ভুনাথকে এক সপ্তাহ পর আবার আসতে বলেন। সুজাতা বলেন, “চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছিলেন বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য। এক সপ্তাহ পর অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানান তাঁরা।” সুজাতা আরও বলে, “অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার টাকা ছিল না, তাই আবার ভ্যানে বসিয়েই বাবাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিই।”
এক নাবালিকা ভ্যান চালাচ্ছে। ভ্যানে এক জন আহত ব্যক্তি। গায়ে ব্যান্ডেজ জড়ানো। এই দৃশ্য দেখেছিলেন ভদ্রক শহরের পথচলতি মানুষ। সেই খবর ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতাল থেকে দু’কিলোমিটার দূরেই কয়েক জন সাংবাদিক সুজাতে দেখতে পান। তাঁরা তখন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে (সিডিএমও) একটি অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু সিডিএমও জানান, রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই হাসপাতালে। ইতিমধ্যে খবর পান ভদ্রকের বিধায়ক সঞ্জীব মল্লিক। তিনি ঘটনাস্থলে এসে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেন। তবে বাড়ি নয়, জেলা হাসপাতালেই ফেরত পাঠানো হয় শম্ভুনাথকে। শম্ভুনাথের ভর্তির ব্যবস্থাও করে দেন সিডিএমও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy