Advertisement
E-Paper

ময়নাতদন্ত করেছেন ‘নিচুজাতের’ চিকিৎসক! ওড়িশার দিনমজুরের শেষকাজে শ্মশানে গরহাজির গ্রামবাসীরা

শুক্রবার মুচুনুর দেহ নিয়ে আসা হয় তাঁর বাড়িতে। সেখানে তাঁর শোকতপ্ত অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, শিশুকন্যা ও মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য আত্মীয়স্বজন বা গ্রামবাসী কেউ হাজির হননি বলে দাবি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:৩৭
মোটরবাইকে করে দিনমজুরের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।

মোটরবাইকে করে দিনমজুরের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক দিনমজুরের মৃত্যুর পর তার দেহের ময়নাতদন্ত করেছেন এক ‘নিচুজাতের’ চিকিৎসক। এই ‘অপরাধে’ ওই দিনমজুরের পরিবারকে কার্যত একঘরে করে শেষকৃত্যে গরহাজির হলেন গোটা গ্রামের প্রায় সমস্ত বাসিন্দা। শেষমেশ গ্রামেরই এক ব্যক্তি তাঁর মোটরবাইকে করে দিনমজুরের দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করেন। শুক্রবার ওড়িশার বরগড় জেলার এমনই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই যকৃতের সমস্যায় ভুগছিলেন ওড়িশার মুচুনু সন্ধা। দিনমজুরি করেই তাঁর সংসার চলত। যকৃতের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তবে শুক্রবার ওই হাসপাতালেই মারা যান মুচুনু। সেখানে তাঁর ময়নাতদন্ত করেন হাসপাতালের এক চিকিৎসক। অভিযোগ, এর পরেই মুচুনুর পরিবারকে একঘরে করেছেন গ্রামবাসীরা। ওই চিকিৎসক ‘নিচুজাতের’ হওয়ায় এই আচরণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।

শুক্রবার হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সে করে মুচুনুর দেহ নিয়ে আসা হয় তাঁর গ্রামের বাড়িতে। সেখানে মুচুনুর শোকতপ্ত অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, তিন বছরের শিশুকন্যা এবং মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যও আত্মীয়স্বজন বা গ্রামবাসীদের কেউ হাজির হননি বলেও দাবি। অবশেষে গ্রামপ্রধানের স্বামী মুচুনুর পরিবারের পাশে দাঁড়ান। সুনীল বেহেরা নামে ওই ব্যক্তিই মুচুনুর দেহ নিজের মোটরবাইকে করে শ্মশানে নিয়ে যান। এমনকি, হাসপাতাল থেকে যে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই দিনমজুরের দেহ গ্রামে আনা হয়েছিল, তাঁর ভাড়ার টাকাও মিটিয়েছেন তিনি। সুনীল বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মুচুনু। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ডে তাঁর মৃত্যু হয়। অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার ৮,০০০ টাকাও জোগাড় করে মিটিয়েছি।’’

মুচুনুর শেষকৃত্যে গ্রামের লোকজন কেন অনুপস্থিত? ‘নিচুজাতের’ চিকিৎসকের হাতে তাঁর ময়নাতদন্ত হয়েছে বলেই কি তাঁকে কার্যত একঘরে করা হয়েছে? সংবাদমাধ্যমের এ সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন সুনীল। তাঁর দাবি, ‘‘মুচুনুর ময়নাতদন্ত নিয়ে গ্রামবাসীরা অখুশি। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, এমন কোনও ব্যক্তির শেষকাজের সময় সে কারণেই থাকতে চান না তাঁরা। এই পরিবারে কোনও পুরুষ সদস্য না থাকায় আমাকেই বাইকে করে দেহ শ্মশানে নিয়ে যেতে হয়েছে।’’

সুনীল জানিয়েছেন, মুচুনির দেহ শ্মশান পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সচালক এবং হেল্পারদের সাহায্য নিয়েছিলেন তিনি।

last rites Odisha Caste System
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy